পর্তুগালের প্রায় অর্ধেক নাগরিক চিকিৎসা সহায়তায় আত্মহত্যার অনুমতি দেওয়ার পক্ষে, তবে ক্যাথলিক চার্চ এই ব্যবস্থার তীব্র বিরোধিতা করে থাকে

নিজের ইচ্ছায় মৃত্যু বা স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক বহু দিনের। তবে এই বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বের অনেক দেশও এই ধরনের মৃত্যুকে আইনি বৈধতা দিয়েছে। এবার একই আইন অনুমোদন করতে যাচ্ছে পর্তুগাল।

শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। অবশ্য আইন অনুমোদিত হলেও এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রেখে দেবে ইউরোপের এই দেশটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার পর্তুগালের পার্লামেন্ট নিজের ইচ্ছায় মৃত্যু বা স্বেচ্ছামৃত্যুকে বৈধতা দিয়ে প্রণীত আইন অনুমোদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর সেটি হলে নির্দিষ্ট সীমিত পরিস্থিতিতে চিকিৎসা সহায়তায় আত্মহত্যার অনুমতি মিলবে।

বিবিসি বলছে, পর্তুগালের পার্লামেন্টে আইনটি অনুমোদিত হলে দেশটির কেবল প্রাপ্তবয়স্করাই স্বেচ্ছামৃত্যুর সুবিধা পাবেন। এছাড়া স্বেচ্ছামৃত্যু সেসব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্যই অনুমোদিত হবে যদি তাদের ইচ্ছা ‘সাম্প্রতিক এবং পুনরাবৃত্তিমূলক, গুরুতর ও মুক্তভাবে’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে।

সংবাদমাধ্যমটি আরও বলেছে, স্বেচ্ছামৃত্যু বেছে নিতে চাওয়া ব্যক্তিকে অবশ্যই ‘অত্যন্ত জটিল বা গুরুতর এবং নিশ্চিত কোনও আঘাত বা দুরারোগ্য রোগের কারণে প্রচণ্ড তীব্র যন্ত্রণার পরিস্থিতিতে’ থাকতে হবে। বিশ্বব্যাপী মাত্র কয়েকটি দেশে এই ধরনের মৃত্যু বেছে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

গত বুধবার পর্তুগালের একটি কমিটি এই আইনের চূড়ান্ত সংস্করণটি অনুমোদন করে। যদিও এই আইন নিয়ে ইউরোপের এই দেশটির চলমান সপ্তাহ ছিল বেশ জটিল এবং প্রধান বিরোধী দল এই ইস্যুতে গণভোটের জন্য শেষবারের মতো আহ্বান জানিয়েছিল।

অবশ্য জনমত জরিপগুলোতে ইউরোপের ক্যাথলিক এই দেশের প্রায় অর্ধেক ভোটারই ডাক্তারি সহায়তায় আত্মহত্যার অনুমতি দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। যদিও এই ধরনের মৃত্যু বেছে নেওয়ার বিধান বা প্রস্তাবকে চার্চ দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করে থাকে।

বিবিসি বলছে, চিকিৎসা সহায়তায় আত্মহত্যার অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাবটি ২০২০ সালে সর্বপ্রথম অনুমোদিত হয়েছিল। সেসময় ইউরোপের মাত্র চতুর্থ দেশ হিসেবে পর্তুগাল ইউথানেশিয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিল।

মূলত নিজের ইচ্ছায় মৃত্যু বা স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করার বিষয়টি সাধারণভাবে ইউথানেশিয়া নামে পরিচিত।

অবশ্য ইংল্যান্ডের আইনে ইউথানেশিয়া বেআইনি এবং এটিকে নরহত্যা বা হত্যা বলে গণ্য করা হয়। তবে এটি তিনটি ইউরোপীয় দেশে সম্পূর্ণ বৈধ: বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ এবং নেদারল্যান্ডস। তবে সহায়তাকৃত মৃত্যু এবং প্যাসিভ ইউথানেশিয়া বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যা আরও অনেক ইউরোপীয় দেশে বৈধ।

টিএম