‘শুধু যাওয়া আসা, শুধু তারা খসা’। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) এরকমই মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হতে চলেছে পৃথিবী। যেদিন আকাশ থেকে প্রতিঘণ্টায় ১২০টি উল্কা আতশবাজির মতো খসে পড়বে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর ওই দৃশ্য দেখা যাবে। ওই জেমনিড উল্কার ঝর্ণা (জেমিনিড মেটিওর শাওয়ার) শুরু হয়েছে চলতি মাসের ৪ তারিখ থেকেই।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কী বলছেন?

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, জেমিনিড এসেছে ৩২০০ ফায়থন নামে এক পাথুরে গ্রহাণু থেকে। ফায়থন কোন গ্রহাণুর বিচ্ছিন্ন অংশ যা সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষিণের সময় ধুলা হয়ে ছড়িয়ে পড়ে মহাকাশে। পৃথিবীর অভিকর্ষজ বলের টানে খুব কাছে এসে পড়লে বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে আগুন জ্বলে ওঠে।

আজ রাতে উল্কাবৃষ্টি

নাসা জানিয়েছে, জেমিনিড মেটিওর শাওয়ার সারা আকাশজুড়ে আলো ছড়ায়। উত্তর পূর্ব আকাশের জেমিনি নক্ষত্র পুঞ্জের কাছ থেকে ছুটে আসে এই উল্কারা, তাই এর নাম ‘জেমিনিড’। গতিবেগ ঘণ্টায় ৭৮ হাজার মাইল বা সেকেণ্ডে ৩৫ কিলোমিটার। দৃশ্যমানতা ভালো থাকলে, মেঘের বাধা না থাকলে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৬০ টি উল্কাবৃষ্টি দেখা যেতে পারে।

এই উল্কাবৃষ্টি চলবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই বৃষ্টি খুব স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হবে যদি টেলিস্কোপ বা দূরবীন ব্যবহার করা যায়।

সৌরমণ্ডলের বাইরে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত কুইপার বেল্ট। যেখানে ধুলা আর গ্যাসের ঘনত্ব খুব কম। পাথর আর বরফের টুকরোয় ভরা এই কুইপার বেল্টের মধ্যেই ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে ধূমকেতুরা। বছরে একবার সূর্যকে সেলাম জানাতে আসে তারা। তখনই সূর্যের তেজে এদের শরীরের কিছু অংশ উল্কা হয়ে পৃথিবীতে ঝরে পড়ে।

সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় প্রচণ্ড উত্তাপে ধূমকেতুর মাথার খানিকটা অংশ ছিটকে বেরিয়ে উল্কা

গত মাসেই পৃথিবীর অতিথি হয়ে এসেছিলো ‘ লিওনেড’। সে ‘টেম্পল টাটল’ নামে ধূমকেতুর অংশ। যে আবার ওই সুদূর ‘কুইপার বেল্টের’ বাসিন্দা। প্রতি ৩৩ বছরে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে যায়। আর সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় প্রচণ্ড উত্তাপে ধূমকেতুর মাথার খানিকটা অংশ ছিটকে বেরিয়ে উল্কা হয়ে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে। 

কেএ