রোগী নিয়ে যেতে যেতে রাস্তায় হঠাৎ অ্যাম্বুলেন্স থামিয়ে বের হয়ে এলেন চালক। এরপর বোতল থেকে মদ ঢাললেন দু’টি গ্লাসে। একটা গ্লাস নিজে পান করলেন। অন্যটা বাড়িয়ে দিলেন অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে থাকা রোগীর দিকে।

ওই রোগীও শুয়ে থাকা অবস্থাতেই মাথা তুলে খেয়ে নিলেন গ্লাসের মদ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে ওড়িশা রাজ্যের জগৎসিংপুর জেলার তিরতল এলাকায়। এদিকে এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যদিও সেই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। অ্যাম্বুলেন্স চালকের এ রকম দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ডে সমালোচনার আঙুল উঠেছে প্রশাসনের দিকেও।

ওড়িশার ভুবনেশ্বরভিত্তিক প্রথম প্রাইভেট ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ওড়িশা টিভি বা ওটিভি ভাইরাল ওই ভিডিওটি প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ওড়িশার তিরতল এলাকার একটি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে দেন অ্যাম্বুলেন্সের চালক। গাড়ি থেকে নেমে গ্লাসে মদ ঢালেন।

এরপর গাড়িতে শুয়ে থাকা রোগীকেও মদ পানের প্রস্তাব দেন। ওই রোগীও তাতে সম্মতিও জানান। এরপর ওই রোগী মদ পানের সময় অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স চালককে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। তবে অ্যাম্বুলেন্স চালক দাবি করেন, রোগী নিজে থেকেই মদ চেয়েছিলেন। ভিডিওতে অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে এক নারী ও শিশুকেও দেখা গেছে।

জগৎসিংপুরের মেডিকেল অফিসার ক্ষেত্রবাসী দাশ পিটিআইকে বলেন, ‘এটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। তাই আমাদের বেশি কিছু বলার নেই। তবে সংশ্লিষ্ট থানাকে অবশ্যই ওই চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারাও।

তিরতল থানার কর্মকর্তা যুগল কিশোর দাস বলেন, এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। এফআইআর নথিভুক্ত হলেই তদন্ত শুরু হবে।

পৃথক এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, সোমবার ওড়িশার জগৎসিংপুর জেলার তিরতল এলাকায় কটক-পারাদীপ এক্সপ্রেসওয়ের সরলা রোডের কাছে এই ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত চালক দাবি করেছেন, আহত যাত্রী যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন এবং তিনি নিজেই মদ্যপান করতে চেয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স চালকের নাম দিলীপ রথ। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পথচারীরা এই ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করার পর তা প্রকাশ্যে আসে।

অভিযুক্তের দাবি, ‘আমি পা ভাঙা রোগীকে চিকিৎসার জন্য পারাদীপ থেকে কটকের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। এটি একটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স এবং এটি বিনামূল্যে পরিষেবা দেয়। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স ছাড়ার পরেই রোগী বারবার মদ খাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকেন। রোগী বলছিলেন তিনি ব্যাথা অনুভব করছেন। তাই তিনি মদ্যপান করতে চান।’

চালকের দাবি, তিনি প্রথম দিকে রোগীর কথায় কর্ণপাত না করলেও রোগীকে যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখে তিনি বিরক্ত হয়ে গাড়ি থামিয়ে তাকে মদ পান করান। লোভ সামলাতে না পেরে নিজেও খেয়েছেন।

টিএম