ভিডিও কলের ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলে ভারতের গুজরাটের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক ২ কোটি ৬৯ লাখ রুপি হাতিয়ে নিয়েছেন এক নারী। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী।

অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমেছে ভারতীয় পুলিশ। তবে এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। 

ভারতীয় পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের ৮ আগস্ট এক নারীর কাছ থেকে একটি কল পেয়েছিলেন ভুক্তভোগী। কলে নারীটি জানিয়েছিলেন, তার নাম রিয়া শর্মা। তিনি মরবিতে থাকেন।

পরে ওই নারী ভিডিও কল করে ওই ব্যবসায়ীকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে পরনের কাপড় খুলে ফেলতে বলেছিলেন। তারপরে তিনি হঠাৎ কলটি কেটে ওই ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার রুপি দিতে বলেছিলেন। তবে রাজি হননি ব্যবসায়ী। এতে ওই ব্যবসায়ীর অশ্লীল ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল করার হুমকিও দিয়েছিলেন নারীটি।

পুলিশ জানায়, কিছু দিন পর ফের কল পান ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী। ফোনের ওপার থেকে নিজেকে দিল্লি পুলিশের পরিদর্শক দাবি করে ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়া হয়।

সেই ব্যক্তি কলার ব্যবসায়ীকে বলেছিলেন, যে তার কাছে একটি ভিডিও ক্লিপ রয়েছে। সেসময় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ কোটি রুপি দাবি করেন ফোন করা সেই ব্যক্তি। পরে ১৪ আগস্ট ফের একটি কল পান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।

এই দফায় কলার নিজেকে দিল্লি পুলিশ সাইবার সেলের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। ভিডিও কলে কথা বলা ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে ব্যবসায়ীকে জানান তিনি। এসময় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৮০ লাখ ৯৭ হাজার রুপি দাবি করা হয়। 

পরে উপায় না দেখে ওই ব্যক্তির চাওয়া অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। টাকা নিয়েও থেকে থাকেনি প্রতারক চক্রটি। এরপর নকল সিবিআই অফিসারের কাছ থেকে কল পান ব্যবসায়ী। কল করে ব্যবসায়ীকে জানানো হয়, বিষয়টির মিমাংসার জন্য ৮.৫ লাখ রুপি দাবি করেছেন ওই নারীর মা।

পরবর্তীতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চক্রটিকে অর্থ প্রদান অব্যাহত রাখেন ওই ব্যবসায়ী। এরপর তাকে দিল্লি হাইকোর্টের একটি জাল আদেশ পাঠায় চক্রটি। যেখানে বলা হয়েছিল, যে বিষয়টি মিমাংসা হয়েছে। এতে ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর সন্দেহ হয়। 

এরপর গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) সাইবার ক্রাইম শাখা থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী। মামলায় তিনি জানান, বিভিন্ন সময় ভিডিও ভাইরালের হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে ২ কোটি ৬৯ হাজার রুপি হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্রটি। 

এ অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ। যদিও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। 

কেএ