হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা জন কিরবি

ইউক্রেন ইস্যুকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক তিক্ততার চরম পর্যায়ে পৌঁছালেও আপাতত এই জোটের সঙ্গে রুশ বাহিনীর সংঘাতের কোনো সম্ভাবনা দেখছে না যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউস।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংস্থা ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের হোয়াইট হাউস প্রতিনিধি জন কিরবি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, ন্যাটো ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘাতের কোনো সম্ভাবনা বর্তমানে বা নিকট ভবিষ্যতে নেই। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ন্যাটোর সঙ্গে রুশ বাহিনীর সংঘাতের যে সম্ভাবনা দেখছেন, সেটিরও ভিত্তি নেই।’

১৯৪৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অ্যালায়েন্স বা ন্যাটো নামের সামরিক জোট গড়ে তোলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ১১টি দেশ। যে ভিত্তির ওপর এই জোটটি গঠিত হয়েছিল, তা হলো— ন্যাটোর কোনো রাষ্ট্রকে যদি সোভিয়েত ইউনিয়ন বা অন্য কোনো শক্তি হামলা করে, সেক্ষেত্রে পুরো জোট সেই হামলা প্রতিহত করবে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ৫ নম্বর ধারায় এ ব্যাপারটির উল্লেখও রয়েছে।

ন্যাটোর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ১৯৫৪ সালে নিজেদের মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে ওয়ারশ প্যাক্ট নামের সামরিক জোট গঠন করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর ওয়ারশ প্যাক্টও বিলুপ্ত হয়ে যায়; তবে ন্যাটো এখনও পূর্ণ সক্রিয় অবস্থায় আছে।

সংবাদ সম্মেলনে কিরবি বলেন, ‘সর্বাধুনিক সামরিক জোট হিসেবে ন্যাটোর শক্তি, মেধা, জনবল ও অন্যান্য সক্ষমতার কোনো অভাব নেই। আমি আরও বলতে চাই, বাইরের কোনো শক্তিকে নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো প্রয়োজনও আমাদের নেই।’

গত এক বছর ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে ইউক্রেনকে সৈনিক সরবরাহ ব্যতীত অন্যান্য সব রকম সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ন্যাটো। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ন্যাটোর সামনে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ সম্পর্কিত ‘রেড লাইন’ জারি করেছিল রাশিয়া। তবে তাকে পাত্তা না দিয়ে ইউক্রেনকে অস্ত্র ও প্রযুক্তি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ন্যাটো।

‘রেড লাইন’ আমলে না নেওয়ায় গত অক্টোবর থেকে রাশিয়ার মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা বলছেন, দিন দিন এই জোটের সঙ্গে সংঘাতের সম্ভাবনা বাড়ছে রুশ বাহিনীর।

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে জন কিরবি বলেন, ‘অযৌক্তিক কোনো রেডলাইন মেনে নিতে আমরা বাধ্য নই।’

এসএমডব্লিউ