পশ্চিমবঙ্গে নতুন রাজ্যপাল নিয়োগ দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সদ্য দায়িত্ব পাওয়া রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস দক্ষিণ ভারতের কেরালা রাজ্যের মানুষ। তার মাতৃভাষা মালায়লাম। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব নিয়ে তিনি বাংলা শেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এজন্য সূচনা হিসেবে রাজ্যপাল সরস্বতী পূজার দিনটিকে বেছে নিয়েছিলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ডয়েচে ভেলে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের রাজভবন প্রাঙ্গণে ছিল নতুন রাজ্যপালের বাংলা কথা বলার প্রথম পর্ব। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। সেদিনই প্রথম বাংলায় কথা বলেন নতুন রাজ্যপাল। আর তার মুখে প্রথম দিনেই শোনা গিয়েছে ‘জয় বাংলা’ শব্দটি। আর এতেই ঘটে বিপত্তি। রাজ্যপালের মুখে ‘জয় বাংলা’ শুনে বেশ চটেছেন বিজেপি নেতারা।

‘বাংলাদেশের স্লোগান’ কেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের মুখে, সে প্রশ্ন তুলে অভিযোগও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, রাজ্যপালকে ভুল বুঝিয়ে তাঁকে দিয়ে ওই শব্দ বলিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

শুভেন্দুর বলেন, ‘জয় বাংলা ভারতের স্লোগান নয়। রাজ্যপাল মহোদয়কে বোঝানো হয়েছে, জয় বাংলা স্লোগান মানে বাংলার জয়। তা তো নয়।’

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার সূত্রে জানা যায়, রাজভবনের অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা করেন। তার পরে রাজ্যপালও কয়েকটি বাক্য বলেন বাংলায়। তিনি বলেন, ‘আমি বাংলা শিখব। বাংলা সুন্দর ভাষা। আমি বাংলাকে ভালবাসি। আমি বাংলার মানুষকে ভালবাসি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস আমার নায়ক। জয় বাংলা, জয় হিন্দ।’ 

এদিকে এই ‘জয় বাংলা’ শব্দ বন্ধেই আপত্তি বিজেপির। যদিও বাংলা ভাষা নিয়ে বৃহস্পতিবার এমনিতেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন রাজ্যপাল। অনেকের মতে, রাজ্যপালের বক্তব্যে এই ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি সেই আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ।

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর দাবি, জয় বাংলা স্লোগান ভারতের নয়। ওটা বাংলাদেশের ‘জাতীয় স্লোগান’। শুভেন্দুর কথায়, ‘এটা প্রথমে শেখ মুজিবুর রহমান, পরে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা ব্যবহার করেন। এখন হাসিনার দল আওয়ামী লীগ তাদের সভা, সমিতি, মিটিং, মিছিলে এই স্লোগান দেয়। ওরা সরকারি অনুষ্ঠানেও ওই স্লোগান দিয়ে থাকে। কিন্তু ভারত বা পশ্চিমবঙ্গে এই স্লোগান চলে না।’

এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতার কণ্ঠেও বেশ কয়েকবার ‘জয় বাংলা’ স্লোগান শোনা যায়। ২০২১ সালে বিধানসভার ভোটপ্রচারে গিয়ে তিনি এই স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। সেই সময়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা এ রাজ্যে নিয়মিত ভোটপ্রচারে আসতেন। তাঁদের ‘বহিরাগত’ বলার পাশাপাশি, মমতা ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দেওয়া শুরু করেন। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মমতা ও তাঁর দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরাও এই স্লোগান দেন।

এমজে