মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের মহড়া ‘চূড়ান্ত সীমায়’ পৌঁছেছে এবং উপদ্বীপকে ‘বিশাল যুদ্ধাস্ত্রাগার ও অত্যন্ত জটিল যুদ্ধক্ষেত্রে’ পরিণত করার হুমকি তৈরি করেছে। বুধবার কোরীয় উপদ্বীপে অত্যাধুনিক বোমারু বিমানসহ বিভিন্ন ধরনের বিমানের ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ মহড়া নিয়ে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া।

বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়া বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মহড়া ‘চরম সীমায়’ পৌঁছেছে। এই মহড়া উপদ্বীপকে একটি ‘বিশাল যুদ্ধাস্ত্রাগার ও জটিল যুদ্ধক্ষেত্রে’ পরিণত করার হুমকি তৈরি করেছে। পিয়ংইয়ং বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনও ধরনের সামরিক পদক্ষেপের কড়া জবাব দেওয়া হবে। প্রয়োজনে সবচেয়ে অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্রসহ অন্যান্য শক্তিশালী অস্ত্রও ব্যবহারের হুমকি দিয়েছে দেশটি।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, ওয়াশিংটন যতদিন বৈরী নীতি অনুসরণ করবে, ততদিন পিয়ংইয়ং কোনও ধরনের সংলাপে আগ্রহ দেখাবে না।

পিয়ংইয়ংয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অজ্ঞাত মুখপাত্রের ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এর পোষ্য বাহিনীর বেপরোয়া সামরিক সংঘাতমূলক কৌশল ও বৈরী কর্মকাণ্ডের কারণে কোরীয় উপদ্বীপে এবং এই অঞ্চলে সামরিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি চরম সীমায় পৌঁছেছে।

বিবৃতিতে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের চলতি সপ্তাহের সিউল সফরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবার অস্টিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র তৈরি ঠেকাতে এবং যুদ্ধ প্রতিরোধে সামরিক মহড়া বৃদ্ধি ও আরও ‘কৌশলগত সম্পদ’ যেমন— বিমানবাহী রণতরী ও দূরপাল্লার বোমারু বিমান মোতায়েনের অঙ্গীকার করেছেন।

উত্তর কোরিয়ার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপজ্জনক পরিস্থিতির পরিষ্কার প্রকাশ; যা কোরীয় উপদ্বীপকে একটি বিশাল যুদ্ধের অস্ত্রাগার ও আরও জটিল যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়াজুড়ে সামরিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে। বৃৃহস্পতিবার ম্যানিলায় বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা ও স্ব-শাসিত তাইওয়ানে উত্তেজনা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের মাঝে ফিলিপাইনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চুক্তির সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

ম্যানিলায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও ফিলিপাইনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্প্রসারিত ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। চুক্তি অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারের অনুমতি দেবে ফিলিপাইন। এ সময় উত্তর কোরিয়ার সাথে চলমান উত্তেজনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে অস্টিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য বৃহত্তর সুরক্ষা ও স্থিতিশীলতার প্রচার করা। দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষায় ওয়াশিংটন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
 
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।

এসএস