বিল গেটস, ফাইল ছবি

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের একসময়ের শীর্ষ ধনী বিল গেটস মনে করেন, যেখানে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের কোনো টিকা নিরাপত্তা নেই, সেখানে মঙ্গল গ্রহে অভিযান পরিচালনা একপ্রকার অপব্যয়। এ কারণে তিনি মঙ্গল অভিযানের পরিবর্তে তিনি টিকা বাবদ বিনিয়োগে আগ্রহী।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে, মঙ্গল গ্রহে যাওয়া খুবই ব্যয়সাপেক্ষ একটি ব্যাপার; তার চেয়ে আপনি যদি ১ হাজার ডলার ব্যয় করে হামের টিকা কিনে বিতরণ করেন— তাহলে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব।’

বিশ্বের বর্তমান শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় থাকা ইলন মাস্ক সম্প্রতি বলেছেন, তিনি মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি স্থাপনে বিনিয়োগে আগ্রহী। এই তালিকার অপর ব্যক্তি জেফ বেজোসও প্রায় একই কথা বলেছেন।

কিন্তু বিবিসিকে দেওয়া সাম্প্রতিক সাক্ষাতকারে এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে বিল গেটস বলেন, ‘আমার মনে হয়, মঙ্গলে যাওয়ার চেয়ে টিকা কেনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

সাক্ষাৎকারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়েও কথা বলেন বিল গেটস। তাঁর মতে, এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ‘নাটকীয়ভাবে’ মানব সভ্যতাকে বদলে দিতে পারে।

‘এটি (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) আমাদের চিকিৎসা ও বিজ্ঞানের নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে সহায়তা করবে। এটি শুধু রোবট নয়, এটি পড়তে ও লিখতে আমাদের সহায়তা করে। এমনকি এটি আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতেও ভূমিকা রাখবে।’

একসময়ের বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস ২০০৬ সালে মাইক্রোসফটের দৈনন্দিন কাজ থেকে অবসর নিয়ে সাবেক স্ত্রী স্ত্রী মেলিন্ডা গেটসের সঙ্গে পূর্ণোদ্যমে লেগে পড়েন দাতব্য কাজে, গড়ে তোলেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এই ফাউন্ডেশন বিভিন্ন  জনহিতকর কাজ ও গবেষণায় অর্থ দান করে। দাতব্য কাজে পূর্ণ মনোনিবেশ করতে ২০১৯ সালে মাইক্রোসফটের পরিচালনা পর্ষদ থেকেও অবসর নেন বিল গেটস।

এখন বিল গেটস নিয়মিত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে দেখা করছেন, স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সোচ্চার আছেন। প্রতিদিন নিয়ম করে পড়াশোনা করছেন, লিখছেন। পাশাপাশি বিল গেটস বিশ্ব থেকে অপুষ্টি এবং ম্যালেরিয়া ও পোলিওর মতো রোগ দূর করার লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছেন।

করোনা মহামারির সময় বিশ্বজুড়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়েছিল, যা বেশ অবাক করেছিল বিল গেটসকে। বিবিসিকে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি এমনটা আশা করিনি। মহামারির সময় আমি লাখ লাখ বার্তা আদান-প্রদান করেছি। এটা সত্য, আমি টিকা প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত ছিলাম, কিন্তু তা কেবল মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য।’

এসএমডব্লিউ