ইউক্রেনে যুদ্ধরত রাশিয়ার এসাল্ট ইউনিটের সেনারা নিজ কমান্ডারদের বিরুদ্ধে গুরতর অভিযোগ করেছেন। এই ইউনিটের কয়েকজন সেনা জানিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে তারা যেন পিছু হটতে না পারেন, সেজন্য তাদের পেছনে ব্যারিয়ার সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। এমনকি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে পালানোর চেষ্টাতেও তাদের বাঁধা দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান সোমবার (২৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, রাশিয়ার ওই এসাল্ট ইউনিটের যেসব সেনা প্রচণ্ড হামলার মুখে পালানোর চেষ্টা করেছেন তাদের গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল।

ওই এসাল্ট ইউনিটের কিছু সেনা একটি ভিডিও ধারণ করে সরাসরি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সহায়তা কামনা করেন। ভিডিওতে ওই সেনারা জানান, তারা স্ট্রম ইউনিটের সদস্য, যেটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি ইউনিট।

আলেক্সান্ডার গোরিন নামের এক সেনা প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমরা ১৪ দিন ধরে মর্টার ফায়ার ও কামানের মধ্যে উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছি। আমরা অনেক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছি। ৩৪ জন আহত এবং আমাদের কমান্ডারসহ ২২ জন নিহত হয়েছেন।’

আরেকজন সেনা জানান, যখন তাদের ইউনিটটি তৈরি করা হয়েছিল তখন তাদের দলে ছিলেন ১৬১ জন সেনা।

অভিযোগকারী সেনা আলেক্সান্ডার গোরিন আরও জানিয়েছেন তারা সেনাবাহিনীর হেডকোয়ার্টারে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের এতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘তারা আমাদের পেছনে ব্যারিয়ার সেনা মোতায়েন করেছে,, আমাদের সরে যেতে দিচ্ছে না। তারা হুমকি দিচ্ছে আমাদের এক এক করে ধ্বংস করে দেবে। আমরা তাদের অবহেলার স্বাক্ষী হওয়ায় তারা আমাদের মেরে ফেলতে চায়।’

সের্গেই মোলদোনাভ নামে অপর এক সেনা ভিডিওতে বলেন, ‘আমাদের কমান্ডাররা সংঘবদ্ধ অপরাধী।’

ওই ভিডিওতে থাকা ৮ জন সেনাকে খুঁজে বের করতে সমর্থ হয় গা্র্ডিয়ান। এরমধ্যে তিনজন সংবাদমাধ্যমটির সঙ্গে কথা বলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেনা জানিয়েছেন, ওই ভিডিওটি গত শুক্রবার টেলিগ্রামে প্রকাশ করা হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরই তাদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

১৬১ সেনাকে নিয়ে এই এসাল্ট ইউনিটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে তৈরি করা হয়। এই ইউনিটের বেশিরভাগ সেনা বেশ অভিজ্ঞ। ওই সময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ইউনিটটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে ইউক্রেনের সেনাদের সবচেয়ে জটিল ও কঠিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ঢুকে পড়ার জন্য।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এমটিআই