চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ফাইল ছবি)

সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এসময় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি সৌদি-ইরানের মধ্যকার আলাচনার বিষয়েও সমর্থন জানিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট।

মূলত দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর চীনের মধ্যস্ততায় সম্প্রতি কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদের সাথে ফোনে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছে বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া সিসিটিভি। সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে ফলো-আপ আলোচনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তারা।

মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সংলাপের ফলাফলের ভিত্তিতে উভয় পক্ষ ক্রমাগত তাদের সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জিনপিং।

মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাস সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে বৈরিতার কথাই বলে। তবে এই মাসের শুরুর দিকে চীনের মধ্যস্ততায় ইরান এবং সৌদি আরব সাত বছর পর আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে।

সেই সাথে দুই মাসের মধ্যে দু’দেশ পরস্পরের রাজধানীতে তাদের দূতাবাসও খুলবে। যা পশ্চিম এশিয়ার এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিকে নতুন আকার দিতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমন থেকে উভয় পক্ষই লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে এবং এই কারণেই মূলত তারা এই অবস্থানে এসেছে। কারণ ইরান এই অঞ্চলে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য মার্কিন প্রচেষ্টাকে হ্রাস করতে চায় এবং সৌদি আরবও নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সেবছর সৌদি আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

রয়টার্স বলছে, সম্প্রতি ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে মধ্যস্ততা করেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যুবরাজ সালমানের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি বলেছেন, চীন-সৌদি আরব নিজেদের সম্পর্কের উন্নয়ন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দুই দেশ তাদের নিজ নিজ মূল স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে একে অপরকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করবে।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য চীন ও সৌদি আরব আরও বেশি অবদান রাখবে বলেও জিনপিং বলেছেন।

টিএম