যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিলের দ্য কভেনেন্ট স্কুলে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। এতে হামলাকারী ও তিন শিশুসহ ৭ জন নিহত হন।।

স্কুলের ভেতর এমন ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর হামলাকারীর পরিচয় খুঁজে বের করেছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন তথ্য পেয়েছেন তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম অদ্রে হেল। হামলায় যেসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোসহ মোট ৭টি অস্ত্র বৈধভাবে আলাদা ৫টি দোকান থেকে কিনেছিলেন তিনি এবং সেগুলো নিজের বাবা-মায়ের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ছিলেন।

এছাড়া হামলাকারী ‘ইমোশন ডিজঅর্ডার’ বা হতাশায় ভুগছিলেন। তিনি হতাশা থেকে মুক্তি পেতে ডাক্তারের শরণাপন্নও হয়েছিলেন।  

সবচেয়ে ভয়ানক যে বিষয়টি ঘটেছে, সেটি হলো খুবই পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারী স্কুলের ম্যাপ তৈরিসহ নজরদারি চালিয়েছিলেন এবং হামলার ব্যাপারে লিখেছিলেন। যেটিকে পুলিশ ‘ঘোষণাপত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছে।  

এদিকে টেনেসিতে প্রাপ্ত বয়স্ক যে কেউ চাইলেই অস্ত্র কিনতে পারেন। এমনকি যদি কেউ হামলা চালাবেন এমন কোনো ইঙ্গিতও পাওয়া যায়— তাহলে তার কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া যাবে না।

যদিও পুলিশ বলেছে, যদি হামলা হবে এমন আলামত পাওয়া যেত তাহলে অবশ্যই অস্ত্রগুলো বাজেয়াপ্ত করা হতো।

এমন ঘটনা ঘটার পর হামলাকারীর বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে পুলিশ। তারা জানিয়েছেন, হামলা চালানো ২৮ বছর বয়সী অদ্রে হেল ওই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন।

তারা আরও জানিয়েছেন, তারা ভেবেছিলেন তাদের সন্তানের কাছে শুধুমাত্র একটি অস্ত্র ছিল। কিন্তু সেটিও বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের অগোচরে সে আসলে বাড়িতে আরও অস্ত্র কিনে সেগুলো জড়ো করছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের এই ভয়াবহ হামলার পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়। সেখানে দেখা যায় অদ্রে হেল স্কুল চত্বরে আসেন। তখন দরজা বন্ধ ছিল। ওই সময় গুলি করে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন তিনি। তার গায়ে ছিল প্রতিরক্ষামূলক ভেস্ট। স্কুলে ঢোকার সময় এক হাতে একটি রাইফেল ছিল তার। এছাড়া আরেকটি অস্ত্র ঝোলানো ছিল।

প্রথমে তিনি নিচ তলায় গুলি চালান। এরপর দ্বিতীয় তলায় ওঠেন। হামলার খবর শুনেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় পুলিশ। ওই সময় হামলাকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে দোতলা থেকে গুলি ছোড়েন।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। তিনি দোতলার এমন জায়গায় অবস্থান নেন, যেখানে তাকে পুলিশ সহজেই গুলি করতে পারছিল না। এ কারণে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেতরে ঢুকে অদ্রে হেলকে গুলি করে হত্যা করেন আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই