ভারতে মোদি সরকারের আমলে মুসলিমদের জীবন কঠিন হয়েছে- এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন উল্টো প্রশ্ন করেছেন- মুসলিমদের ওপরে ভারতে নির্যাতন হলে তাদের জনসংখ্যা বাড়ছে কীভাবে!
 
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে এক প্রশ্নের জবাবে সীতারামন বলেন, গোটা বিশ্বে মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী ভারতে রয়েছে। তাদের জনসংখ্যাও বাড়ছে। 
 
পাকিস্তানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ১৯৪৭-এর তুলনায় ভারতের মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে চললেও, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা কমেছে।  

সীতারামনের এ বক্তব্য প্রসঙ্গে বিরোধীরা বলছেন, মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে বিপদ হিসেবে দেখিয়ে যে প্রচার চালানো হয়, অর্থমন্ত্রীর কথায় তারই প্রতিফলন ফুটে উঠেছে। সীতারামন শুধু মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির কথাই বলছেন। মোদি জমানায় সংসদ থেকে বিজেপি শাসিত রাজ্যের বিধানসভাগুলোতে যে মুসলিমদের উপস্থিতি প্রবল হারে কমেছে, সে কথা বলেননি। কারণ বিজেপি কোনো মুসলিমকে প্রার্থীই করে না। 

ওয়াশিংটনে পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকনমিকসে ভারতের অর্থনীতি নিয়ে এক আলোচনায় সীতারামনকে ভারতের মুসলিমদের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি এই ধারণা সত্যি হয়, বা বাস্তবেই রাষ্ট্রের মদতে মুসলিমদের জীবনযাপন কঠিন হয়ে উঠে থাকে, তা হলে কি ১৯৪৭-এর তুলনায় মুসলিমদের জনসংখ্যা বাড়ত? ১৯৪৭-এ একই সময় তৈরি হওয়া পাকিস্তানে সমস্ত সংখ্যালঘুর সংখ্যা কমছে। মুসলিমদের মধ্যে শিয়া, মোহাজিরদের সংখ্যা কমছে। ভারতে সব সম্প্রদায়ের মুসলিমেরা ব্যবসা করছেন, তাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা পাচ্ছে, বৃত্তি পাচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ২০১৪ থেকে কোনো সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা কমছে বা তাদের ওপরে বেশি মাত্রায় ঋণের বোঝা চেপেছে, এমন নয়। যারা ভারত সম্পর্কে নেতিবাচক রিপোর্ট তৈরি করেন, তাঁদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। 

সীতারামনে এ বক্তব্যের সমালোনা করে সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) দলের প্রধান এবং হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী রাজনীতিক আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, বিশ্বগুরুর অর্থমন্ত্রীর কাছে পাকিস্তানই মাপকাঠি। আর কত দিন মুসলিমদের পাকিস্তানের সঙ্গে জুড়ে দেখা হবে। লোকসভায় বিজেপির এক জনও মুসলিম সাংসদ নেই। তারা এই বিষয়টিকেই পদক হিসেবে বুকে ঝুলিয়ে ঘুরছে। 

এনএফ