ফিলিপাইনে আবু সায়াফের শীর্ষ নেতা নিহত
ফিলিপাইনের তাউই-তাউই প্রদেশের লাঙ্গুয়ান শহরে দেশটির জঙ্গিগোষ্ঠী আবু সায়াফের হাতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্দি চার ইন্দোনেশীয় নাগরিককে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। শনিবার রাতে এক অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করেন ফিলিপাইনের সেনারা। অভিযানে আবু সায়াফের শীর্ষ নেতা মাজান শহীদজুয়ানসহ দুই জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
উদ্ধার হওয়া ইন্দোনেশীয় নাগরিকরা হলেন— আরিজাল কাস্তা মিরান (৩০), আরশাদ বিন দাহলান (৪১), অ্যান্ডি রিসওয়ান্ত (২৬) এবং মোহাম্মদ খায়রুলদিন (১৫)। গত বছরের জানুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়ার তামবিশান দ্বীপে ছুটি কাটাতে যান তারা। ১৭ জানুয়ারি তাদের অপহরণ করে আবু সায়াফ।
বিজ্ঞাপন
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়ে ফিলিপাইন সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল কর্লেটো ভিনলুয়ান জুনিয়র বলেন, এই চার ইন্দোনেশীয় নাগরিককে অপহরণের মূল কারণ ছিল মুক্তিপণ আদায়। মাজান শহীদজুয়ান ছিলেন এই অপহরণের মূলহোতা। তিনি আবু সায়াফ গোষ্ঠীর শীর্ষ ৫ নেতার একজন এবং দলের ‘মাস্টারমাইন্ড’ নামে পরিচিত ছিলেন।
ফিলিপাইনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে মাজান শহীদজুয়ান ‘আপো মাইক’ নামে পরিচিত। রয়টার্সকে ভিনলুয়ান জুনিয়র বলেন, ‘চার জিম্মির মুক্তি এবং আপো মাইকসহ তার দুই সঙ্গী নিহতের ঘটনায় আমরা খুশি। অভিযানে আবু সায়াফের বেশ বড় ক্ষতি হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
১৯৯১ সালে ফিলিপাইনের মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য মিন্দানাওয়ে গঠিত হয় চরমপন্থী ধর্মীয় গোষ্ঠী আবু সায়াফ। আব্দুর রাজিক আবু বকর জানজালানি ও তার ভাই খাদাফি জানজালানি ছিলেন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা।
প্রতিষ্ঠার কয়েক বছরের মধ্যে কট্টরপন্থী এই দলটি ফিলিপাইন সরকারের জন্য বড় একটি সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়। অপহরণ, জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণ, হত্যা, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা এবং নারী-শিশু পাচারের মতো অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে মিন্দানাও ও তার আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক হিসেবে পরিচিতি পায় আবু সায়াফ।
ফিলিপাইনের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, এক সময় মধ্যপ্রাচ্য থেকে আবু সায়াফকে নিয়মত অর্থায়ন করা হতো। ২০১০ সালের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে এই জঙ্গিগোষ্ঠীর অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায়। তাদের অর্থ যোগাড়ের বড় একটি উৎস হয়ে দাঁড়ায় অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়। ২০১৪ সালে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আবু সায়াফ।
ভিলুয়ান জুনিয়র জানিয়েছেন, তামবিশান থেকে মোট ৫ জনকে অপহরণ করে আবু সায়াফ। তাতে নেতৃত্ব দেন মাজান শহীদজুয়ান ওরফে ‘আপো মাইক’। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে তাদের একজন পালানোর চেষ্টা করায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
এসএমডব্লিউ/এএস