২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে সামরিক ব্যয় অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এ বছরে সামরিক খাতে ব্যয় পৌঁছেছে দুই দশমিক ২৪ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা পৃথিবীর ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যয়। 

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় গোটা বিশ্ব যখন টালমাটাল অবস্থায়, তখনও সামরিক ব্যয়ের রেকর্ডের পেছনে দায়ী করা হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে। এছাড়াও বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি, চীনকে ছাড়িয়ে যেতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকেও অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।  

বৈশ্বিক সামরিক ব্যয় নিয়ে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)।

গবেষকরা বলছেন, ২০২২ সালে সামরিক ব্যয় আগের বছরের চেয়ে অন্তত তিন দশমিক সাত ভাগ বেশি। ইনস্টিটিউটটির জ্যেষ্ঠ গবেষক নান তিয়ানবলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো বা মন্দ, যা-ই ছিল, সামরিক বাহিনী ব্যয় আগের বছরের তুলনায় শুধু বেশিই নয়, অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। 

গবেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের সামরিক বাজেটের আকার বড় করার প্রতি নতুন করে মনোযোগী করে তুলেছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে রাশিয়া প্রথমবারের মতো ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করলে দেশগুলো একের পর এক সামরিক ব্যয় বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। 

এসআইপিআরআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র এখনও বিশ্বে সামরিক খাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা দেশ। দেশটি ২০২২ সালে ব্যয় শূন্য দশমিক সাত ভাগ বাড়িয়ে করেছে ৮৭৭ বিলিয়ন ডলার। যা ওই বছরের বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের ৩৯ শতাংশ। অন্যদিকে, ২০২২ সালে রাশিয়া তাদের সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে ৯ দশমিক দুই ভাগ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা চীন ব্যয় করেছে ২৯২ বিলিয়ন ডলার, যা বিশ্বের মোট সামরিক খরচের ১৩ শতাংশ।  জাপান ২০২২ সালে ব্যয় করেছে ৪৬ বিলিয়ন ডলার।

পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, ইতালির মতো ইউরোপীয় দেশগুলোও গত দশকে সামরিকে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। অত্যাধুনিক ও দামি অস্ত্র কিনতে ফিনল্যান্ডেও গত বছর ব্যয় বাড়িয়েছে। গেল বছর ৬৪টি মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ফিনল্যান্ড৷

ইউরোপে সামরিক খাতে সবচেয়ে বেশি খরচ করা দেশ যুক্তরাজ্য। তালিকায় দেশটির অবস্থান ষষ্ঠ। বৈশ্বিক সামরিক খাতে দেশটির খরচ তিন দশমিক এক শতাংশ। যুক্তরাজ্যের পরে জার্মানির অবস্থান। বৈশ্বিক সামরিক খাতে মোট ব্যয়ের আড়াই শতাংশ জার্মানির, আর দুই দশমিক চার শতাংশ ফ্রান্সের।

তিয়ান বলেন, ফ্রান্স ও জার্মানির তুলনায় ইউক্রেনকে বেশি সামরিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রেও শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্রের নাম। এর পরেই আছে যুক্তরাজ্য।

এনএফ