গত কয়েকমাসে ভারতে করোনায় সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিনে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছে সেখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। মুম্বাই নগর কর্তৃপক্ষ থেকে দেওয়া এ বিষয়ক এক আদেশে রোববার রাত আটটার পর থেকে নগরীর হোটেল, রেস্তোঁরা, পানশালা, শপিং মলগুলো বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে রাত আটটার পর ঘরের বাইরে বের না হওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে আদেশে।

মুম্বাইয়ের মেয়র কিশোর পেদনেকর বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। বর্তমানে এ শহরে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েই চলেছে এবং আমরা লক্ষ্য করছি, শহরের বস্তি এলাকাগুলোর চেয়ে বহুতল আবাসিক ভবনগুলোতে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেশি হচ্ছে। এ কারণে, খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত আটটার পরে ঘরে অবস্থান করতে নগরবাসীদের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গত একসপ্তাহ ধরে ভারতে ফের উর্ধ্বমূখী হয়েছে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুহারের রেখচিত্র। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার একদিনে দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ৭১৪ জন, মারা গেছেন ৩১২ জন যা এ পর্যন্ত ভারতে সর্বোচ্চ সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড।

করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে গত বেশ কিছুদিন ধরে ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে মহারাষ্ট্র। শনিবার রাজ্যটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজারেরও বেশি, মারা গেছেন ১৬৬ জন।

মুম্বাইয়ের সরকারী হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যে জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ভীড় বাড়তে থাকায় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সুযোগ তাদের আর নেই।

মহারাষ্ট্র ছাড়াও ভারতের যে রাজ্যগুলোতে করোনার উচ্চ সংক্রমণ হার দেখা যাচ্ছে, সেগুলো হলো—কেরালা, পাঞ্জাব, কর্ণাটক, গুজরাট, তামিলনাড়ু, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশ।

নিজস্ব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে করোনার দুটি টিকা প্রস্তুত করেছে ভারত— কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন। এছাড়া ভারতের টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সিটিটিউট অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকাও তৈরি করছে।

ইতোমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৬ কোটি ১০ লাখ টিকার ডোজ পাঠিয়েছে ভারত। এর একটি অংশ গিয়েছে দান হিসেবে, অন্যগুলো বিক্রি হয়েছে।

তবে সম্প্রতি দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় টিকার ডোজ রফতানি স্থগিত করেছে ভারতের সরকার।

গত ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদন কর্মসূচি শুরু হয়েছে ভারতে। ইতোমধ্যে ৪ কোটিরও বেশি মানুষকে টিকার আওতায়ও আনা হয়েছে। তবে পরিসংখ্যান বলছে, এখন পর্যন্ত দেশটির মোট জনগণের ৪ শতাংশেরও কম মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ