রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
গাড়ির লোভ দেখিয়ে দূতাবাসের কম্পিউটার হ্যাকের চেষ্টা
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়ার সেনারা। এ সময় ভারী যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে দেশটিতে কথিত অভিযান শুরু করে তারা।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে অস্ত্রের যুদ্ধ শুরুর পাশাপাশি, পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে সাইবার যুদ্ধেও জড়িত হয় রাশিয়া। প্রতিপক্ষ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর তথ্য হাতিয়ে নিতে হ্যাকারদের মাঠে নামায় তারা।
বিজ্ঞাপন
এরমধ্যে সামনে এলো— কম দামে বিএমডব্লিউ গাড়ির লোভ দেখিয়ে— ইউক্রেনে অবস্থিত অন্তত ২২টি দেশের দূতাবাসে সাইবার হামলার চেষ্টা চালিয়েছিল রুশ হ্যাকার গ্রুপ এপিটি২৯ বা ‘কোজি বিয়ার।’
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বুধবার (১২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রযুক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পালো আলোতো নেটওয়ার্কের ইউনিট ৪২ গবেষণা বিভাগ এই হ্যাক প্রচেষ্টা সম্পর্কে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
বিজ্ঞাপন
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে রাশিয়ার বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করা একটি হ্যাকিং গ্রুপ— ইমেইলে কমদামে বিএমডব্লিউ গাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন পাঠিয়ে ইউক্রেনে অবস্থিত ২২টি দূতাবাসের কর্মীদের প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছে। তারা এমনভাবে ফাঁদ পেতেছিল— যদি কেউ ওই বিজ্ঞাপনটিতে ক্লিক করতেন তাহলে তাদের কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ হ্যাকারদের কাছে চলে যেত।
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, গাড়ির যে বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে হ্যাকিংয়ের চেষ্টা হয়েছে, সেই বিজ্ঞাপনটি আসলে তৈরি করেছিলেন পোল্যান্ড দূতাবাসের এক কর্মকর্তা। তিনি সত্যিই নিজের ব্যবহৃত একটি গাড়ি বিক্রির জন্য— বিভিন্ন দূতাবাসের মেইলে বিজ্ঞাপনটি পাঠিয়েছিলেন। আর সেই বিজ্ঞাপনটি হাতিয়ে নিতে সমর্থ হয় রুশ হ্যাকাররা। এরপর তারা একই ধরনের একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করে। তবে ওই পোলিশ কর্মকর্তা গাড়ির যে দাম দিয়েছিলেন, সেটি থেকে দাম কমিয়ে লেখে হ্যাকাররা। যেন দূতাবাসের কর্মীরা এতে বেশি আকৃষ্ট হন।
পোল্যান্ড দূতাবাসের ওই কর্মকর্তা নিরাপত্তার কারণে নিজের পরিচয় প্রকাশে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিজ্ঞাপন দেখার পর গাড়ির কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে কয়েকজন ফোন দেন। কিন্তু তারা তার গাড়ির দাম বলছিল ৭ হাজার ৫০০ ইউরো। কিন্তু তিনি যে দাম উল্লেখ করেছিলেন; সেটির তুলেনায় এই দাম অনেক কম ছিল।
ওই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, তিনি তার গাড়িটি বিক্রি করতে পারেননি এবং ইউক্রেনে আর বিক্রি করার ইচ্ছাও নেই। এখন গাড়িটি নিজের দেশে নিয়ে যাবেন।
যে ২২টি দূতাবাসে হ্যাকিংয়ের চেষ্টা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ২১টির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তবে এসব দূতাবাস কোনো জবাব দেয়নি। ফলে রুশ হ্যাকারদের খপ্পরে দূতাবাসের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী পড়েছিলেন কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সূত্র: রয়টার্স
এমটিআই