সৌদি রাজধানী রিয়াদে ড্রোন হামলার দাবি হুথি বিদ্রোহীদের
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে ড্রোন হামলার দাবি করেছে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীরা। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দেশটির ‘স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সামরিক অবস্থান’ লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘চারটি ড্রোনের সাহায্যে আমাদের বিমান বাহিনী সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। ড্রোনগুলো লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সৌদি আগ্রাসনের মোকাবিলায় এ ধরনের পাল্টা আঘাত আমাদের ন্যায্য অধিকার। যতদিন পর্যন্ত ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ও অবরোধ অব্যাহত থাকবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের দেশ থেকে পাল্টা আঘাত করা হবে।
তবে বৃহস্পতিবারের হামলা সম্পর্কে সৌদি সরকার বা সৌদি গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সৌদি আরবের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত কিং খালিদ বিমানঘাঁটিতে প্রতিশোধমূলক পৃথক আরও একটি হামলা চালানোর দাবি করেছে হুথিরা। দারিদ্র্যপীড়িত ইয়েমেনের ওপর সামরিক আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে বিমানঘাঁটিতে এই হামলা চালানো হয় উল্লেখ করেছে তারা।
কিং খালিদ বিমানঘাঁটিসহ আরও বেশ কয়েকটি ঘাঁটি ব্যবহার করে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে আসছে সৌদি আরব। ইয়েমেনের আল-মাসিরা টেলিভিশন চ্যানেল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিং খালিদ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় হুথি যোদ্ধারা।
এই হামলা সম্পর্কে ইয়াহিয়া সারি জানান, সৌদি বিমানঘাঁটির ওপর হামলা চালাতে তারা দুটি কাসেফ-২কে ড্রোন ব্যবহার করেছে।
এর আগে গত মার্চ মাসে ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রবিরতি পরিকল্পনা মেনে নিতে অস্বীকার করে হুথি বিদ্রোহীরা। তাদের দাবি, এই অস্ত্রবিরতি পরিকল্পনা তাদের দেশকে আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে।
সৌদি আরবের তেল কারখানা-সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে সম্প্রতি হামলা বৃদ্ধি করেছে হুথি। এমনকি ইয়েমেনের গ্যাস-সমৃদ্ধ মাগরিব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্যও স্থল অভিযান পরিচালনা করছে দেশটির এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এর জবাবে হুথির সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা পরিচালনা করছে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।
২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে।
ইয়েমেনে এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়।
মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধে ইয়েমেনে ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং বাস্ত্যুচুত হয়েছেন লাখো মানুষ। চলমান এই সংঘাতে ইয়েমেন চরম দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ।
টিএম