অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর যুক্তরাজ্যে ৩০ জনের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা ঘটেছে। দেশটির নীতিনির্ধারকরা বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) একথা জানিয়েছেন। এর আগে মাত্র পাঁচজনের শরীরে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। পরে তা আরও ২৫ জনের শরীরে দেখা দেয়।

এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ব্যবহারে গ্রহীতার শরীরে রক্ত জমাট বাঁধছে বলে প্রথমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আপত্তি ওঠে। ব্রিটেন সেসময় জানিয়েছিল, তাদের দেশে এক কোটির দশ লাখ মানুষকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হলেও এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে এখন দেখা যাচ্ছে, সংস্থাটির টিকা নেওয়ার পর ব্রিটেনেও রক্ত জমাট বাঁধার মতো গুরুতর ঘটনা ঘটছে।

যুক্তরাজ্যের মেডিসিন অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি জানিয়েছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর ২২ জনের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছে। আর আটজনের শরীরে সামান্য পরিমাণে রক্ত জমাট বেঁধেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক কোটি ১০ লাখ মানুষকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে।

ওই রেগুলেটরি এজেন্সির দাবি, এই টিকার উপকারিতার দিকে তাকালে সম্ভাব্য ঝুঁকি বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পরিমাণ হয়তো খুব বেশি নয়। তবে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে এ ধরনের কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ে সৃষ্ট টানাপোড়েনের কারণে বেশ কয়েকটি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ইউরোপীয়ান মেডিসিন এজেন্সির (ইএমএ) পরামর্শ অনুযায়ী অন্য অনেক দেশ আবারও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রয়োগ শুরু করেছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার সঙ্গে গ্রহীতার রক্ত জমাট বাধার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে এর আগে জানিয়েছিল সংস্থা দু’টি।

গত ১৮ মার্চ যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রথমবারের মতো স্বীকার করে যে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা নেওয়ার পর পাঁচ জনের মাথায় রক্ত জমাট বেঁধেছে বলে রিপোর্ট পেয়েছে তারা। আর এরপর বৃহস্পতিবার সংস্থাটি জানায়, টিকা নেওয়ার পর ২২ জনের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধেছে। আর আটজনের শরীরে রক্ত জমাট বেঁধেছে সামান্য পরিমাণে।

সূত্র: রয়টার্স, ডয়চে ভেলে

টিএম