করোনার চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে ইরানে
পার্সিয়ান নববর্ষের ছুটির সময় লাখ লাখ মানুষ এক স্থান থেকে অন্যত্র ভ্রমণের কয়েকদিনের মাথায় চতুর্থ দফায় ইরানে মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে এখনই সতর্ক না হলে দেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে শঙ্কা করছেন খোদ দেশটির প্রেসিডেন্ট।
আল-জাজিরার শনিবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী ইরানের ৩২ প্রদেশের মধ্যে রাজধানী তেহরান সংলগ্ন আলবোর্জ এবং পশ্চিমের ইলাম প্রদেশে করোনা সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। উল্লিখিত দুটি বাদেও দেশটির আরও সাত প্রদেশ চতুর্থ দফায় করোনার প্রকোপের মুখে রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ইরানের জাতীয় করোনাভাইরাস টাস্কফোর্সের এক সভায় দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, আমরা যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়গুলো বিবেচনা না নেই তাহলে অন্যান্য প্রদেশেও মহামারি এই ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ শুরু হয়ে যাবে। অতএব, আমাদের এ নিয়ে এখনই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরানে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। এরপর শীর্ষ বিপর্যস্ত দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয় ইরান। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১৯ লাখের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে ৬৩ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্যে করোনায় ইরানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
বিজ্ঞাপন
করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ আবারও হাসপাতালে মানুষের ভর্তি হওয়ার সংখ্যা এবং প্রাণহানি বাড়বে বলে শঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য খাতের কর্মকর্তারা। এর জন্য গত ২০ তারিখ ইরানের নতুন বছর অর্থাৎ নওরোজ ও তার ছুটিতে মানুষের অবাধ ভ্রমণের বিষয়টিকে দায়ী করছেন তারা। ওই ছুটির দুই সপ্তাহ পর সংক্রমণ চূড়ায় উঠছে।
নওরোজের কারণে ইরানে বেশ কিছুদিন সরকারি-বেসরকারি ছুটি থাকে। ঐতিহ্যগতভাবে ইরানিরা এ সময় ভ্রমণ করে থাকেন। ছুটি কাটাতে চলে যান বাড়িতে। সময় কাটান পরিবারের সদস্য ও বন্ধু-স্বজনদের সঙ্গে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা যদিও বলছেন, এবারের ছুটিতে তারা ভ্রমণের বিপক্ষে ছিলেন কিন্তু সরকারিভাবে বিধিনিষেধ ছিল না। ফলে রেড ও অরেঞ্জ জোনে থাকা শত শত শহরে মানুষের সমাগম ছিল অতিরিক্ত। গণপরিবহনে চলাচলেও কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না। মোট কথায় ভাইরাসটি সংক্রমণ ছড়ানোর উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছে।
ইরানের করোনা টাস্কফোর্সের মুখপাত্র আলিরেজা রায়েইসি শনিবার বলেন, এই বছর নওরোজের (নববর্ষ) সময় সড়ক ভ্রমণ বেড়ে যায় প্রায় একশ’ শতাংশ। এর আগে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী মোহাম্মদ এসলামি জানান, তার ধারণা, এবারের ছুটির দিনগুলোতে প্রায় ৭৮ লাখ মানুষ গণপরিবহন করে বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেছেন।
এএস