ফাইল ছবি

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামী মাসে অর্থাৎ নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে উভয় নেতার মধ্যে সামনা-সামনি এই বৈঠক হতে পারে।

মূলত বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তেজনার মধ্যেও বৈশ্বিক পরাশক্তি এই দুই দেশ তাদের মধ্যকার সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চায়। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস আগামী মাসে সান ফ্রান্সিসকোতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে মুখোমুখি বৈঠকের পরিকল্পনা করছে বলে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে।

তাইওয়ান, কোভিড-১৯ মহামারির উৎপত্তি, গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ, মানবাধিকার সংক্রান্ত সমস্যা এবং বাণিজ্য শুল্কসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের দুটি বৃহত্তম এই অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ক টানাপোড়েন চলছে। এরপরও এই দুই দেশ তাদের সমস্যাযুক্ত সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে চায়।

মার্কিন এই প্রভাবশালী সংবাদপত্রটি অজ্ঞাতনামা ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এই খবর সামনে এনেছে। এই কর্মকর্তাদের একজন বলেছেন, বাইডেন ও জিনপিংয়ের মধ্যে নভেম্বরে বৈঠকের সম্ভাবনা ছিল ‘বেশ দৃঢ়’।

কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদপত্রটি বলেছে, ‘আমরা এই বৈঠকের পরিকল্পনার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করছি।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে অন্যান্য উচ্চ-পর্যায়ের কর্মকর্তারা সফর করেছেন। চলতি বছরের জুনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন, জুলাই মাসে অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন এবং আগস্টে বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমন্ডোর মতো মার্কিন কর্মকর্তাদের চীন সফর প্রত্যক্ষ করেছে বিশ্ব।

এছাড়া সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন নিউইয়র্কে চীনা ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংয়ের সাথে দেখা করেছেন এবং মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান মাল্টায় চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সাথে দেখা করেছেন।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস ওয়াশিংটন পোস্টের এই প্রতিবেদনের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি। এছাড়া হোয়াইট হাউসও তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।

২০২২ সালের নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ায় জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে শেষবার বৈঠক হয়েছিল। বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেটিই ছিল তাদের প্রথম ব্যক্তিগত বৈঠক।

এছাড়া ২০২১ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর শি জিনপিংয়ের সঙ্গে পাঁচবার ফোন বা ভিডিও কলে কথা বলেছেন জো বাইডেন।

রয়টার্স বলছে, শি জিনপিং ও জো বাইডেনের মধ্যকার যে কোনও বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রের ‘পর্যাপ্ত আন্তরিকতা দেখানোর’ ওপর নির্ভর করবে বলে চীনের শীর্ষ নিরাপত্তা সংস্থা গত মাসে ইঙ্গিত দিয়েছে।

এছাড়া রাইমন্ডো এবং ইয়েলেনের মতো মার্কিন কর্মকর্তারা সম্প্রতি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। তবে তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি এবং সামরিক অর্থায়নে মার্কিন অনুমোদনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বেইজিং।

উল্লেখ্য, সান ফ্রান্সিসকোতে নভেম্বরে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপিইসি) শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যোগ দিতে পারেন শি জিনপিং। এছাড়া সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও তাতে অংশ নেননি চীনা প্রেসিডেন্ট।

অবশ্য ভারতে জিনপিংয়ের না আসার খবরে হতাশা প্রকাশ করেছিলেন জো বাইডেন।

টিএম