ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপদেশ সেইন্ট ভিনসেন্টে প্রায় ৪২ বছর সক্রিয় হয়ে উঠেছে আগ্নেয়গিরি লা সৌফ্রিয়ারে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি এলাকায় বসবাসকারীদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রালফ গঞ্জালভেস।

লা সৌফ্রিয়ারে আগ্নেয় পর্বতে সর্বশেষ অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৭৯ সালে। তার চার দশকেরও বেশি সময় পর গত বৃহস্পতবার প্রথম অগ্নুৎপাতের লক্ষণ দেখা দেয়। এদিন সন্ধ্যার দিকে আগ্নেয় পর্বতের জ্বালামুখের চারপাশে লাভার স্তর দেখতে পান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পরদিন শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯ টার দিকে শুরু হয় অগ্নুৎপাত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব বিভাগ জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে ৬ কিলোমিটার উঁচু পর্যন্ত পৌঁছেছে কালো ধোঁয়া ও ছাইয়ের স্থম্ভ।

এদিকে বৃহস্পতিবার আগ্নুৎপাতের লক্ষণ দেখা যাওয়ার পর সেদিনই পর্বতের আশপাশের এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন সেইন্ট ভিনসেন্টের প্রধানমন্ত্রী রালফ গঞ্জালভেস। দেশটির জাতীয় জরুরি অবস্থা ব্যাবস্থাপনা সংস্থা (এনইএমও) জানিয়েছে ইতোমধ্যে লা সৌফ্রিয়ারের আশপাশের এলাকা থেকে ১৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে দ্বীপের অপর প্রান্তে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ল্যাভার্ন কিং নামের এক স্বেচ্ছাসেবক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আকস্মিক এই অগ্নুৎপাতের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষজন। ‘রেড জোন’ থেকে মানুষদের সরিয়ে নেওয়া এখনো অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

পূর্ব ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের অন্যান্য দ্বীপগুলোর মতো সেইন্ট ভিনসেন্টও আগ্নেয় দ্বীপমালার অন্তর্ভুক্ত। দু’টি আগ্নেয় পর্বত রয়েছে দেশটিতে – লা সোফ্রিয়ারে এবং মাউন্ট পিলি।

এর আগে ১৯৭৯ যখন সর্বশেষ অগ্নুৎপাত হয়েছিল লা সোফ্রিয়ারে, সেসময় আর্থিক হিসেবে মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ডলারেরও বেশি।

তবে সেইন্ট ভিনসেন্টের ইতিহাসে অগ্নুৎপাতের কারণে সবচেয়ে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছিল ১৯০২ সালে অগ্নুৎপাতের সময়। বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সে সময় নিহত হয়েছিলেন ১ হাজারেরও বেশি মানুষ।

মাউন্ট পিলি যদিও বহু বছর ধরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় আছে, তবে স্থানীয় পত্রিকাগুলো বলছে, সম্প্রতি সেখানেও অগ্নুৎপাতের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

এসএমডব্লিউ