ডেথ সার্টিফিকেট ছাপা হয়ে গিয়েছিল। চুন্নু কুমারের 'মৃতদেহ' পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কাঁদতে কাঁদতে সেই দেহ নিয়ে শ্মশানে পৌঁছেও গিয়েছিলেন আত্মীয়স্বজন।  কিন্তু শেষ মুহূর্তে সন্দেহ হওয়ায় স্বামীর মুখ দেখতে চান কবিতা দেবী, আর তাতেই নিশ্চিত 'মৃত্যু'র হাত থেকে এ যাত্রা রক্ষা পেলেন চুন্নু কুমার (৪০)।

ভারতের বিহার রাজ্যের রাজধানী পাটনার পাটনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (পিএমসিএইচ) ঘটেছে এই ঘটনা। এর জেরে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পাটনা মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসন। বিব্রত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের প্রশাসনও।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে গত শুক্রবার (৯ এপ্রিল) পাটনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় চুন্নু কুমারকে। হাসপাতালে তার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

করোনা ওয়ার্ডে রোগীর আত্মীয়দের প্রবেশ নিষেধ থাকায় হাসপাতালে ভর্তির পর চুন্নুর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি তার আত্মীয়রা। তবে চুন্নু কুমারের ছোটভাই ব্রিজ বিহারি জানিয়েছেন, গত শনিবার পর্যন্ত তারা জানতেন চুন্নু কুমার ভালোই আছেন।

ব্রিজ বিহারি বলেন, ‘কিন্তু রোববার (১১ এপ্রিল) সকাল ১০টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে জানানো হয় দাদা (চুন্নু কুমার) মারা গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কালো প্যাকেটে মোড়ানো দেহ আমাদের হাতে তুলে দেয়। আমাদেরকে মুখ দেখতে দেওয়া হয়নি। দেহ নিয়ে গ্রামে যেতেও নিষেধ করা হয়।’

গ্রামে যেতে নিষেধ করার কারণে অগত্যা পাটনাতেই চুন্নু কুমারের শেষ কৃত্যের আয়োজন করেন তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু শেষকৃত্য শুরু হওয়ার আগে মরদেহের উচ্চতা নিয়ে সন্দেহ জাগে চুন্নু কুমারের স্ত্রী কবিতা দেবীর। স্বামীর মুখ দেখতে চান তিনি।

সেই অনুযায়ী প্লাস্টিক খুলে মুখ দেখার পরেই সকলে হতভম্ব হয়ে পড়েন, কারণ সেই মৃতদেহ চুন্নু কুমারের ছিল না। তারপরই দ্রুত মেডিক্যাল কলেজে ছোটেন সবাই; ডেথ সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে হট্টগোল বাধিয়ে দেন।

পরে ব্রিজ বিহারি কোভিড ওয়ার্ডে গিয়ে দেখেন, চুন্নু কুমার বহাল তবিয়তে রয়েছেন। এমনকি আগের চেয়ে তার শারীরিক অবস্থারও উন্নতি হয়েছে।

খবর পেয়ে সোমবারই পাটনা মেডিক্যাল কলেজে যান বিহারের স্বাস্থ্য সচিব প্রত্যয় অমৃত এবং সেদিনই হাসপাতালের হেলথ ম্যানেজারকে সাসপেন্ড করা হয়। গোটা ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পাটনার জেলাপ্রশাসক চন্দ্রশেখর সিং। পাটনা মেডিক্যালের সুপার আই.এস. ঠাকুর জানান, তদন্তে যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএমডব্লিউ