মহামারি করোনায় ভারতের পরিস্থিতি এখন ভয়ঙ্কর। ভারতে করোনার প্রকোপে সবচেয়ে বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র। দেশটির সবচেয়ে ধনী এ রাজ্যটিতে প্রতি তিন মিনিটে একজনের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে করোনাভাইরাস। চলমান এই পরিস্থিতির দিন দিন আরও অবনতি হচ্ছে।

ভারতে দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রকোপ শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপে দৈনিক আক্রান্ত ছিল সর্বোচ্চ লাখ ছুঁই ছুঁই। কিন্তু এখন দৈনিক প্রায় তিন লাখে দাঁড়িয়েছে সংক্রমণ। এরমধ্যে গতদিন শুধু মহারাষ্ট্রেই আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৬৮ হাজার ৬৩১ জন।    

ভারতে প্রথম কিংবা দ্বিতীয় দুই দফায় করোনার প্রকোপে সবচেয়ে বিপর্যস্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র রয়েছে সংক্রমণের শীর্ষে। সোমবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর থেকে দেওয়া হিসেবে জানানো হয়েছে, গড়ে প্রতি তিন মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে, ঘণ্টায় আক্রান্ত দুই হাজার ৮৫৯।

এই পরিসংখ্যানে রীতিমতো উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনের। অথচ দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে অবস্থিতি মহারাষ্ট্র হলো দেশটির সবচেয়ে ধনী এলাকা। এখানেই রয়েছে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাই। ভারতের জাতীয় রাজধানী দিল্লির চেয়ে মুম্বাইয়ের অবস্থা খারাপ। 

গত ২৪ ঘণ্টায় আরও প্রায় ৬৯ হাজার আক্রান্ত নিয়ে মহারাষ্ট্রে মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩৮ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩৮ জন। একদিনে মৃত্যুর সংখ্যায়ও রেকর্ড হয়েছে। গতদিন শুধু মহারাষ্ট্রে আরও ৫০৩ জনের মৃত্যুর পর রাজ্যটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে।

প্রাদেশিক রাজধানী মুম্বাইতে গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে হাজার ৪৬৮ জনের। এছাড়া রোববার মুম্বাইতে মারা গেছেন ৫৩ জন। শুধু মুম্বাইতেই এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১২ হাজার ৩৫৪ জন। ভয়াবহ এই প্রকোপ শুরু গোটা মহারাষ্ট্রে।

হাসপাতালে শয্যা আরও অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংকট দেখা দিয়েছে। ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবশ্য অক্সিজেনের যোগান দিতে ‌‘অক্সিজেন এক্সপ্রেস’ চালুর ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া দেখা দিয়েছে টিকার সংকট। বন্ধ করে হয়ে গেছে অনেক টিকাদান কেন্দ্রও। 

ভারতে রেকর্ড সংক্রমণ ও প্রাণহানি

এদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল ভারতে আজ সোমবার একদিনে রেকর্ড দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮১০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৬১৯ জনের। করোনায় বিপর্যস্ত দিল্লি ছয় দিনের জন্য লকডাউন করা হয়েছে।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় রীতিমতো নাকাল ভারত। দেশটিতে ভয়াবহভাবে বেড়েই চলেছে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। টানা গত পাঁচদিন ধরে ভারতে দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ছিল দুই লাখের বেশি।

এএস