ইসরায়েলের পাল্টা হামলার আশঙ্কায় উচ্চ সতর্কতায় ইরান
ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বহুদিনের বৈরিতা থাকলেও এবারই প্রথমবারের সরাসরি ইসরায়েলে হামলা চালালো দেশটি।
এমন অবস্থায় ইসরায়েল এবার ইরানে পাল্টা হামলা চালাতে পারে। আর সম্ভাব্য সেই হামলার আশঙ্কায় উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে ইরান। রোববার (১৪ এপ্রিল) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
বিজ্ঞাপন
সংবাদমাধ্যমটির দোরসা জব্বারী তেহরান থেকে জানিয়েছেন, দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলের হামলার বিষয়ে ইরানের প্রতিক্রিয়া সুনির্দিষ্ট এবং সীমিত হবে বলে ইরানি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন এবং আজ আমরা বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিযান দেখেছি।
তিনি বলেছেন, আমি মনে করি- ইরানের কাছ থেকে দেশটির সবচেয়ে খারাপ প্রতিক্রিয়াটিই আমরা দেখেছি। এটি অবশ্যই পূর্ণ-মাত্রার কোনও আক্রমণ নয়। এবং অবশ্যই ইরান ঠিক কী করতে সক্ষম তার একটি প্রদর্শনও এটি। এগুলো এমন দৃশ্য যা আমরা আগে কখনও দেখিনি - ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ মিসাইল এবং ড্রোন ইসরায়েলি ভূখণ্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির মতে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ইসরায়েলের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। তবে ইরানের এই দাবি অবশ্যই ইসরায়েল অস্বীকার করেছে।
আল জাজিরার দোরসা জব্বারী বলছেন, এখন এই হামলা-পাল্টা হামলার পরবর্তী পর্ব শুরু হবে। (ইরানের হামলার জবাবে) ইসরায়েলের জবাবও তাই হবে। এবং সেই কারণে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী উচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে এবং ইসরায়েলকে (পাল্টা হামলার বিষয়ে) হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেশটির একজন কমান্ডার বলেছেন, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের হামলার জবাব কঠোরভাবে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
তবে আপাতত ইসরায়েল ঠিক কী করবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে ইরানিরা... বর্তমানে পরিস্থিতি আরও খারাপ না করে তারা এই দ্বন্দ্বকে বজায় রাখতে সক্ষম হবে কিনা সেটিও বোঝার চেষ্টা করছে তারা।
এদিকে ইরানের সর্বশেষ এই হামলা ইসরায়েলের জন্য নতুন পরীক্ষা হয়ে সামনে এসেছে বলেও জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
অন্যদিকে জাতিসংঘে দেওয়া এক চিঠিতে ইরান বলেছে, তারা আর উত্তেজনা চাইছে না।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ভেনেসা ফ্রেজিয়ারকে দেওয়া এক চিঠিতে তেহরান জোর দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলের ওপর তার হামলা ইসরায়েলি ‘আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে ইরানের আত্মরক্ষার একটি আইনি এবং ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ।
এছাড়া গত ১ এপ্রিল দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইরায়েলের প্রাণঘাতী বিমান হামলার নিন্দা করতে নিরাপত্তা পরিষদের ব্যর্থতার নিন্দাও করেছে জাতিসংঘে অবস্থিত ইরানি মিশন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘জাতিসংঘের একজন দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে ইরান জাতিসংঘের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের নিহিত উদ্দেশ্য ও নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমাদের এই ধারাবাহিক অবস্থান এটিই পুনর্ব্যক্ত করে যে, দেশটি এই অঞ্চলে উত্তেজনা বা সংঘাত চায় না।’
এরপরও যেকোনও হুমকির বিরুদ্ধে তারা ইরানি জনগণ ও স্বার্থ রক্ষা করবে বলে ইরান সতর্ক করেছে।
টিএম