ফাইজারের টিকা নিয়ে ৬২ জনের হৃদযন্ত্রে সমস্যা
ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিাকা নেওয়ার পর ইসরায়েলে এ পর্যন্ত ৬২ জন মায়োকার্ডিডিটি বা ‘হৃৎপিণ্ডের আকার বৃদ্ধি’ সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন, বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ইসরায়েলের করোনা প্রতিরোধী টাস্কফোর্সের কমিশনার ন্যাচমান অ্যাশ সম্প্রতি দেশটির বেতার সংবাদমাধ্যম রেডিও ১০৩ এফএম-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানিয়েছেন। ইসরায়েলের স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ইতোমধ্যে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ফাইজার। তবে কোম্পানির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, টিকা গ্রহণের সঙ্গে মায়োকার্ডিডিটি সমস্যার সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।
সাক্ষাৎকারে অ্যাশ জানান, ইসরায়েলে মোট ৫০ লাখ মানুষ ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকার দু’ডোজ নিয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এই টিকা নেওয়ার পর প্রতি ১ লাখে একজন মায়োকার্ডিডিটি সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। যারা এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদর বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
তবে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার কার্যকারিতার ওপর এখনো আস্থা হারায়নি ইসরায়েল সরকার। সাক্ষাৎকারে ন্যাচমান অ্যাশ বলেন, ‘আমরা এখনো জানি না ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার সঙ্গে এই মায়োকার্ডিডিটির সরাসরি কোনো সম্পর্ক রয়েছে কি না। তবে (মায়োকার্ডিডিটির সঙ্গে) কোনো সম্পর্ক যদি থেকেও থাকে, তাহলেও আমি বলব, এই টিকায় ঝুঁকির চাইতে উপকার অনেক বেশি।’
বিজ্ঞাপন
টিকার ব্যবহারে স্থগিতাদেশ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাশ তা নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘আপাতত আমাদের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।’
এদিকে, রোববার এই সাক্ষাৎকার প্রকাশের একদিন পর মঙ্গবার এ সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিয়েছে ফাইজার কর্তৃপক্ষ। সেখানে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের বর্তমান উদ্ভূত সমস্যায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে।’
‘আমাদের হাতে থাকা তথ্য বলছে, ইসরায়েলে যারা এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছে, এই টিকা গ্রহণের সঙ্গে তাদের সমস্যার কোনো সম্পর্ক নেই। অন্তত আমাদের গবেষণায় এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
এর আগে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকার বিরুদ্ধে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার মতো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা নেওয়ার পর ইউরোপে একশরও অধিক ব্যক্তি এবং জনসনের করোনা টিকা নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ জনের দেহে ‘রক্ত জমাট বাঁধা’ সমস্যা দেখা দেয়। তাদের কয়েকজন এতে আক্রান্ত হয়ে মারাও গিয়েছেন।
তবে ইউরোপীয় মেডিকেল এজেন্সি (ইএমএ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের (সিডিসি) গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও জনসনের টিকার সঙ্গে রক্ত জমাট বাঁধার সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। এবার ফাইজারের টিকা গ্রহণের পরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ উঠল।
সূত্র: ব্লুমবার্গ
এসএমডব্লিউ/জেএস