ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ যাত্রায় একে একে শুভাকাঙ্ক্ষীদের পাশাপাশি অভিনন্দন বার্তা পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ এবং রাজনাথ সিংয়ের মতো শীর্ষ বিজেপি নেতাদের। তবে এখনও অভিনন্দন জানাননি তৃণমূল কংগ্রেসকে ‘এক ছোবলে ছবি করে দেওয়ার’ স্লোগানদাতা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।

পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপিতে যোগদানের সংখ্যা নেহাত কম ছিল না। তবে সবার মধ্যে নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তীর যোগদান ছিল অন্যতম। কলকাতায় সেদিন মোদির ব্রিগেডে সমাবেশের মঞ্চে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে উপস্থিত হন মিঠুন।

সে দিনই তৃণমূলের রাজ্যসভার সাবেক এই সাংসদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিজেপির পতাকা। পরে ভাষণ দেওয়ার সময় নিজেকে ‘জাত গোখরো’ উল্লেখ করে বিরোধীদের এক ছোবলে ছবি করে দেওয়ার সংলাপ বলে বাহবা কুড়ান তিনি।

কিন্তু নির্বাচনে তার ছোবল কাজ করেনি, এতে বিজেপিরও ২০০ তো দূরের কথা মাত্র ৮০-র ঘরও পার করা হয়নি। রোববার সকালে ভোটগণনা শুরুর পর থেকে যত সময় গড়িয়েছে, ততই স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূলের বিজয়।

বিজয় মেনে নিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্যস্তরের নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংসহ অনেকেই মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে চুপ রয়েছেন জনপ্রিয় সংলাপ বলে বাহবা কুড়ানো মিঠুন চক্রবর্তী। নির্বাচন চলার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে ভোট নিয়ে যথেষ্ট সক্রিয় থাকলেও ফল সামনে আসার পর সেখানেও নেই কোনো নতুন বার্তা।

একটা সময় মনে হয়েছিল রাজ্যে বিজেপির প্রধান মুখ হয়ে উঠতে পারেন মিঠুন। কিন্তু তাকে প্রার্থীও করেনি বিজেপি। যদিও তিনি নিজেও প্রার্থী হতে তেমন আগ্রহী ছিলেন না বলে শোনা যায়। এরপরও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে জনসভা, রোড-শো করেছেন তিনি। বিজেপির দেওয়া হেলিকপ্টারে চষে বেড়িয়েছেন রাজ্যের এক মাথা থেকে আরেক মাথা। তবে শেষ দিকে জনসভায় লোক না হওয়ার মতো বিতর্কেও জড়াতে হয়েছে মিঠুনকে।

রোববারের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বুঝিয়ে দিল, পশ্চিমবঙ্গে এক প্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। তাই বিভিন্ন সভায় বিখ্যাত সংলাপগুলো মানুষকে শুনিয়ে আনন্দ দেওয়া মিঠুনের সংলাপ, বাচনভঙ্গি অনেক হাততালি হয়তো পেয়েছে। কিন্তু ভোটবাক্সে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।

একইভাবে ছোবল কাজ না করায় নীরব ফাটাকেষ্ট।

টিএম