গোটা ভারতের মতো বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও বেড়েই চলেছে মহামারি করোনার সংক্রমণ। উদ্বেগ বাড়িয়ে কমছে সুস্থতার হারও। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যটিতে করোনায় সর্বাধিক ১৯ হাজার ৪৩৬ জন আক্রান্ত ও সর্বাধিক ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

করোনায় ভারতের অবস্থা বিপর্যস্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রথমবারের মতো দেশটিতে চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও টানা চতুর্থ দিনের মতো ভারতে চার লক্ষাধিক করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। যেসব রাজ্যে প্রকোপ এখন বেশি তার একটি হলো পশ্চিমবঙ্গ। 

পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ঊর্ধ্বমুখী এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। গণপরিবহন চলাচল সীমিত করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে আংশিক লকডাউন। বিধিনিষেধ কঠোর করার আভাস মিলছে। 

রাজ্যটিতে মোট আক্রান্ত ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৭১৮ জন। করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ২০৩ জনের। সবচেয়ে বাজে অবস্থা প্রাদেশিক রাজধানী অঞ্চল কলকাতার। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু কলকাতাতেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৯৬১ জন; মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। 

গত ২৪ ঘণ্টায় যথাক্রমে উত্তর চব্বিশ পরগনায় ৩ হাজার ৯৮২, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় ৯৬২, হুগলিতে ৯৪৭, হাওড়ায় ১ হাজার ১৯৬, পশ্চিম বর্ধমানে ৯৪১, পূর্ব বর্ধমানে ৭৪৪, পূর্ব মেদিনীপুর ৬৫৫, পশ্চিম মেদিনীপুর ৭৮৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

ঝাড়গ্রামে ১০৮, বাঁকুড়ায় ৪০৭, পুরুলিয়ায় ২১৮, বীরভূমে ৭৮৫, নদীয়ায় ৯৩২, মুর্শিদাবাদে ৪৯০, দক্ষিণ দিনাজপুর ২৫২, মালদায় ৫৯৭,  উত্তর দিনাজপুরে ৩৬৪, জলপাইগুড়িতে ২৭৮, কালিম্পংয়ে ৪১, দার্জিলিংয়ে ৫৩৫, কোচবিহার ২২৯, আলিপুরদুয়ার ২৭ জন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ৬ মে নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগামী ১৫ দিন রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন এবং কোভিড সতর্কবিধি মেনে চলা উচিত।

প্রসঙ্গত, শনিবার করোনায় মৃতের দেহ নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের। শর্তসাপেক্ষে করোনায় মৃতের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোভিড প্রোটোকল মেনে পরিবার করতে পারবেন অন্ত্যেষ্টি। সরকারি হাসপাতাল থেকে শ্মশানে দেহ নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও দেওয়া স্পষ্ট নির্দেশ। এতদিন করোনায় মৃতদের দেহ হাতে পেতেন না পরিবারের মানুষ।

এএস