ইসরায়েলের দখলদারিত্ব বাড়ানোকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের সাম্প্রতিক যে সংঘাত চলছে, তাতে এবার প্রায় সরাসরি ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মে) এক টু্ইট বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জঙ্গি হামলার বিরুদ্ধে অবশ্যই ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। এটা সত্যিই মেনে নেওয়া অসহ্য যে ইসরায়েলের নাগরিকরা প্রতি মুহূর্তে রকেট হামলার আতঙ্কে বসবাস করছে। এ কারণেই আত্মরক্ষার্থে ইসরায়েল যা করছে, তাতে আমাদের প্রশাসনের সমর্থন আছে।’

অবৈধ দখলদারিত্বের প্রতিবাদে গত ৯ মে রাতে আল-আকসায় মসজিদে শবে কদরের (লায়লাতুল কদর) নামাজ আদায় শেষে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করেন সেখানে উপস্থিত ফিলিস্তিনি মুসল্লিরা। স্বাভাবিকভাবেই তা দমাতে তৎপর হয়ে ওঠে ইসরায়েলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

এ সময় বিক্ষোভকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যকার সংঘাতে আহত হন অন্তত ৯০ জন ফিলিস্তিনি। সংঘাতের পর থেকে আল-আকসা মসজিদ ও এর সংলগ্ন এলাকা ঘিরে রেখেছিল ইসরায়েলি পুলিশ।

এর জেরে ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হামাস হুমকি দেয় ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন সরকারকে। হামাসের পক্ষ থেকে আল্টিমেটাম দিয়ে বলা হয়, ১০ মে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ চত্বর থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার না করা হলে তার পরিণতির জন্য ইসরায়েল সরকার দায়ী থাকবে।

ইসরায়েল এই হুমকিকে আমল না দেওয়ায় ১০ মে সন্ধ্যার পর গাজা থেকে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। সেই হামলা এখনও অব্যাহত আছে। ফরাসী বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে দেড় হাজারের বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে হামাস।

হামাসের রকেট হামলায় ইসলায়েলে এ পর্যন্ত ছয় জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের রাষ্ট্রায়ত্ত একটি জ্বালানি কোম্পানির পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই পাইপলাইনে রকেট আঘাত হানার পর আগুন ধরে যায়।

এদিকে, হামাস রকেট হামলা শুরু করার অল্প কিছু সময় পর থেকেই গাজায় ফিলিস্তিনি ঘণবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় এ পর্যন্ত গাজায় মারা গেছেন ৬৯ জন, যাদের মধ্যে ১৭ জন শিশু ও ৮ জন নারী আছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন চার শতাধিক।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সাম্প্রতিক এই সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এই সংঘাতের বিবদমান দু’পক্ষ— ফিলিস্তিনের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল হামাস ও ইসরায়েল সেনাবাহিনীকে যুদ্ধ বিরতির আহ্বানও জানানো হয়েছে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোর পক্ষ থেকে। তবে কোনো পক্ষের মধ্যেই মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার ইচ্ছা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

এসএমডব্লিউ