ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ১০ মে থেকে ইসরায়েলের বোমা হামলা শুরুর পর প্রতি ঘণ্টায় তিন জন করে নিষ্পাপ শিশু হামলার শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে শিশুদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সামরিক সংঘাত শুরুর পর থেকে গত এক সপ্তাহে গাজায় অন্তত ৫৮ শিশু এবং ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে দুই শিশু নিহত হয়েছে। এছাড়া ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় গাজায় ৩৬৬ শিশুসহ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।   

সেভ দ্য চিলড্রেনের ফিলিস্তিন কান্ট্রি ডিরেক্টর জেসন লি বলেছেন, ‌‌‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আর কতগুলো পরিবার তাদের প্রিয়জনকে মরতে দেখবে? নিজের ঘরে যখন বিমান হামলা চলে তখন এসব শিশু আর কোথায় পালিয়ে তাদের জীবন বাঁচাবে?’ 

তিনি আরও বলেন, ‘গাজার অনেক পরিবার ও আমাদের কর্মীরা বলছেন, এমন পরিস্থিতি দেখে তাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। তাদের মনে হচ্ছে, তারা নরকে বাস করছেন। পালিয়ে আশ্রয় নেবেন এমন কোনো জায়গা নেই। এটার কোনো শেষও দেখছেন না তারা।’

ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর গতকাল রোববার ছিল ভয়াবহ দিন। গতকাল ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় ১৬ নারী, ১০ শিশুসহ ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শিশুসহ একদিনে এত মৃত্যু গত এক সপ্তাহে হয়নি।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সংঘাত কমার কোনো লক্ষণ নেই। গাজায় স্থানীয় সময় গতকাল রোববার রাতে ও সোমবারও বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসও ইসরায়েলের শহরগুলোতে রকেট হামলা চালিয়েছে।

গাজায় ধসে পড়া ভবন ও বাড়িঘরের ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিত মানুষ ও মরদেহের খোঁজে তল্লাশি-উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে গাজা বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী। হামলার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন হাজার হাজার পরিবার। তারপরও প্রাণে রক্ষা পাচ্ছেন না।

সংঘাত বন্ধের আন্তর্জাতিক আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু গতকাল বলেছেন, হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক এই অভিযান ‘পুরোদমে’ চলবে। যতদিন প্রয়োজন ততদিন তা চলবে। প্রয়োজনে হামলা জোরদারের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

এএস