রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জের ধরে নেপালে পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নাটকীয় মোড় নিলে শুক্রবার (২১ মে) রাতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে ফের জাতীয় নির্বাচন অনিবার্য হয়ে পড়ল। চলতি বছরের নভেম্বরে সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, নেপালের কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি কয়েকদিন আগে পার্লামেন্টে আস্থাভোটে পরাজিত হন। এরপর বিরোধী নেতা শের বাহাদুর দেউবাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে শুক্রবারের মধ্যে সরকার গঠনের সময় দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী। তবে প্রেসিডেন্টের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শের বাহাদুর দেউবার নেতৃত্বে নেপালি কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়।

ফলে প্রেসিডেন্টে দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। তবে বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকা কে পি শর্মা ওলিকেই কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালনের নির্দেশ দেন বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী।

এদিকে নেপালে প্রতিদিনই করোনা মহামারির অবনতি হচ্ছে। পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ফলে করোনা মহামারির মধ্যেই দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। আগামী নভেম্বর মাসের ১২ থেকে ১৮ তারিখের মধ্যে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি সংসদের আস্থাভোটে পরাজিত হয়েছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তারপর থেকেই নেপালে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। পরবর্তী সরকার গঠন নিয়ে কৌশল সাজাচ্ছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। এই পরিস্থিতিতে নতুন সরকার গড়তে সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারী।

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন নেপালি কংগ্রেসের নেতা শের বাহাদুর দেউবা। কিন্তু নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ‘প্রচণ্ড’ ওরফে পুষ্পকমল দহলের সমর্থন পেলেও জনতা সমাজবাদী পার্টির সমর্থন পেতে ব্যর্থ হন তিনি। যার কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে ব্যর্থ হন তিনি।

প্রসঙ্গত, নেপালি পার্লামেন্টে কংগ্রেসের ৬১ এবং প্রচণ্ডের দলের ৪৯ জন সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে এদের সম্মিলিত ১১০টি আসন সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয়। ২৭৫ আসনের নেপালি পার্লামেন্টে বর্তমানে ২৭১ জন সদস্য রয়েছেন। ফলে ম্যাজিক ফিগার ছিল ১৩৬। ওলিকে সমর্থন জানান ১২১ জন সংসদ সদস্য।

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম