ভিয়েতনামে শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন হাইব্রিড ধরনটি মূলত ভারতীয় ও যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া ভ্যারিয়েন্টের একটি সংমিশ্রণ। ধরনটি বাতাসের মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ভিয়েতনামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুয়েন থান লং করোনার নতুন এই ধরনকে ‘মারাত্মক বিপজ্জনক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে বিশ্ব জুড়ে করোনাভাইরাসের হাজারও রূপান্তর ঘটেছে।

শনিবার (২৯ মে) ভিয়েতনামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী একটি সরকারি অনুষ্ঠানে বলেন, ভারত ও যুক্তরাজ্যে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার ধরনের সংমিশ্রণে নতুন একটি কোভিড-১৯ ভ্যারিয়েন্ট ভিয়েতনামে শনাক্ত হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, নতুন করে সন্ধান পাওয়া এই ভ্যারিয়েন্টটি খুব দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে এর বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি বাতাসে ছড়ায়। নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের শরীরে ভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে।

গত বছরের অক্টোবর মাসে ভারতে শনাক্ত করোনার ধরনটি যুক্তরাজ্যে পাওয়া কোভিড ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। গবেষণা বলছে, ফাইজার ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে কার্যকরী তবে সেটা দ্বিতীয় ডোজের পরে। প্রথম ডোজেই সুরক্ষা মেলার হার কম।

তবে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমিতদের গুরুতর শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। করোনাভাইরাসের আসল রূপের মতো এখনও বয়স্কদের এবং যাদের শারীরিক অবস্থা তুলনামূলক দুর্বল তাদের ঝুঁকি বেশি।

এমন অবস্থায় যে জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ এখনও ভ্যাকসিনের আওতায় আসেনি সেখানে এই সংক্রামক এবং বিপজ্জনক করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে মৃত্যু বেশি হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে ভিয়েতনামে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়েছে। মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭০০ মানুষ। এরমধ্যে অর্ধেকের বেশি শনাক্ত হয়েছে চলতি বছরের এপ্রিল মাসের পরে। ভিয়েতনামে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৪৭ জন।

ভিয়েতনামে এর আগেই করোনার সাতটি ধরন শনাক্ত হয়েছে। এগুলো হলো বি.১.২২২, বি.১.৬১৯. ডি৬১৪জি, বি.১.১.৭ (ব্রিটেনের ধরন), বি.১.৩৫১, এ.২৩.১ এবং বি.১.৬১৭.২ (ভারতীয় ধরন)। এখন আরও একটি ধরন শনাক্ত হওয়ায় দেশটিতে উদ্বেগ বেড়েছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

টিএম