গত কয়েক বছরের মধ্যে গতকাল শুক্রবার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ছিল সর্বোচ্চ। শুধু তাই নয়, গেল সপ্তাহে তিন বার বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। কোভিড টিকাদান কর্মসূচির কারণে মহামারিতে জারি বিধিনিষেধগুলো শিথিল এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাজারে চাহিদা ফের আগের মতো হতে শুরু করায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের এই মূল্যবৃদ্ধি।   

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের ভবিষ্যত সরবরাহ মূল্য ১৭ সেন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেল প্রতি ৭২ দশমিক ৬৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে; ২০১৯ সালের মে মাসের পর যা সর্বোচ্চ। এ নিয়ে গেল সপ্তাহে তিন দফায় ব্রেন্টের দাম মোট ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমেডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের ভবিষ্যত সরবরাহ মূল্য ৬২ সেন্ট বেড়ে ৭০ দশমিক ৯১ ডলারে দাঁড়িয়েছে; ২০১৮ সালের অক্টোবরের পর যা সর্বোচ্চ। ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম তো গেল সপ্তাহে ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে।

মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস আশা করছে, গ্রীষ্মে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচির কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতি বাড়বে বলেই তেলের দামও বাড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক প্রাইস ফিউচার গ্রুপের সিনিয়র অ্যানালিস্ট ফিল ফ্লিন বলছেন, ‘সরবরাহের চেয়ে দ্রুতগতিতে চাহিদা ফের আগের অবস্থানে ফিরে আসতে শুরু করেছে এবং আমাদের এই চাহিদা পূরণ করতে হলে আরও বেশি করে জ্বালানি তেলের যোগান দিতে হবে।’

এদিকে নিজেদের মাসিক প্রতিবেদনে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) জানিয়েছে, ওপেক প্লাসের (বিশ্বের তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের জোট) জ্বালানি তেল উত্তোলনের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। ২০২২ সালের শেষদিকের মধ্যে বিশ্বে জ্বালানি তেলের চাহিদা মহামারির পূর্বের অবস্থায় আবার ফিরে আসবে বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তেল উৎপাদনকারীদের প্রতি এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি আরও বলছে, ‘আগামী বছরের মধ্যে জ্বালানি তেলের চাহিদা ফের আগের অবস্থায় ফিরতে পারে। এতে করে গতি আসবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমেও। ফলে তখন জ্বালানি তেলের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে। ওপেক প্লাসের উচিত তাদের খনিগুলোকে এখন আরও উৎপাদন সক্ষম করা।’

এএস