ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিচ্ছেদের পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রথম একটি বড় ধরনের বাণিজ্যিক চুক্তিতে পৌঁছেছে যুক্তরাজ্য।  মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই চুক্তির ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছে লন্ডন।

ঐক্যমতে পৌঁছানোর পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এই চুক্তি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের ‘নতুন ভোর।’ 

ব্রিটেনের সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের পর যুক্তরাজ্য প্রথম কোনও প্রধান চুক্তিতে পৌঁছেছে। এই চুক্তির ফলে ব্রিটেনের সব ধরনের পণ্যের শুল্ক বাতিল হয়ে যাবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই চুক্তির মূলনীতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

গত বছর যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ১৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউরোর বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। নতুন চুক্তির ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও বৃদ্ধি পাবে বলে প্রত্যাশা করা হয়েছে বিবৃতিতে। 

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়া থেকে মদ্যপানীয়, সাঁতারের পোষাক এবং মিষ্টান্ন খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে কোনও ধরনের শুল্ক গুনতে হবে না। অন্যদিকে, গাড়ি, স্কটিশ হুইস্কি, বিস্কুট এবং সিরামিকসহ ব্রিটেনের অন্যান্য পণ্যসামগ্রী অস্ট্রেলিয়ায় আরও সস্তা হবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, যুক্তরাজ্য-অস্ট্রেলিয়ার এই চুক্তিকে বিস্তৃত এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অবাধ বাণিজ্য চুক্তিতে যোগদানের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে বরিস জনসন বলেছেন, আমাদের নতুন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ব্রিটিশ বাণিজ্য এবং ভোক্তাদের জন্য চমৎকার সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে। এমনকি যেসব তরুণ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে বসবাস করেন এবং কাজের সুযোগ চান তাদের জন্যও এটি এক ধরনের সুযোগ। 

দুই দেশের কৃষি খাতের নানা সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগও আছে এই চুক্তিতে। চুক্তি অনুযায়ী, ব্রিটেনের কৃষকরা শুল্ক কোটা ও অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে কমপক্ষে ১৫ বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে কৃষি সরঞ্জাম ও পণ্যসামগ্রী শুল্কমুক্ত আমদানি করতে পারবেন।

ব্রিটেন বলছে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নতুন বাজার সৃষ্টিসহ বিদেশে রফতানি বৃদ্ধিতে কৃষিখাতের উৎপাদনকারীদের সহায়তা করা হচ্ছে।

বিশ্বের অন্য প্রান্তে ব্রিটেনের সাবেক উপনিবেশ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এই চুক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তির দেশগুলোর সাথে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনাকে আরও কঠিন করে তুলতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন। একই সঙ্গে এই চুক্তি খুব বেশি ফলপ্রসূ হবে না বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তারা।

সূত্র: বিবিসি, এএফপি।

এসএস