যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল বলে এক গবেষণায় উঠে আসার পর এই ভাইরাসের উৎস তদন্তের পরবর্তী পর্যায়ে দেশটিকেই অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন চীনের জ্যেষ্ঠ এক বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেছেন, ভাইরাসটি যেহেতু ডিসেম্বরের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত হয়েছে; সেহেতু কোভিড-১৯ এর উৎস অনুসন্ধানে সেখানেই মনোনিবেশ করা উচিত।

চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ (এনআইএইচ) ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারিভাবে করোনায় প্রথম শনাক্তের তথ্য প্রকাশের কয়েক সপ্তাহ আগেই যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচটি রাজ্যের অন্তত সাতজন বাসিন্দা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ জেং গুয়াং বৃহস্পতিবার দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসকে বলেছেন, তদন্ত কাজের মনযোগ এখন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে সরিয়ে নেওয়া উচিত। কারণ প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে দেশটি ধীরগতির পরীক্ষা কার্যক্রম চালিয়েছিল এবং অনেক জৈব গবেষণাগারও রয়েছে সেখানে।

তিনি বলেন, দেশটির জৈব-অস্ত্র সম্পর্কিত যেসব বিষয় রয়েছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।

এর আগে বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝ্যাও লিজিয়ান বলেছিলেন, এখন এটি স্পষ্ট যে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের একাধিক উৎস ছিল এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তদন্ত কাজে অন্যান্য দেশেরও সহযোগিতা করা উচিত।

করোনাভাইরাস মহামারির উৎস অনুসন্ধানের বিষয়টি এখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনারও উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই করোনার উৎস তদন্তের কেন্দ্রে ছিল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি। ২০১৯ সালের শেষের দিকে উহানের একটি প্রাণী ও সামুদ্রিক খাবার বিক্রির বাজারে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছিল।

উহানের ল্যাব থেকে করোনাভাইরাস ফাঁস হয়েছিল বলে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি একটি জাতীয় গবেষণাগারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সরকারি ওই গবেষণা প্রতিবেদনের সিদ্ধান্তের কথা জানায়।

অন্য একটি গবেষণায় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই ইউরোপে সার্স-কোভ-২ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এর মানে এই নয় যে, করোনাভাইরাসের উৎপত্তি চীনে হয়নি; যেখানে বুনো প্রাণীর দেহে সার্স করোনাভাইরাসের মতো অনেক ভাইরাস দেখা গেছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস