প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত ও কাশ্মীরের নেতাদেরকে সর্বদলীয় বৈঠকে বসার আমন্ত্রণ জানানোর পর দুই বছর আগে রাজ্যের মর্যাদা হারিয়ে দিখণ্ডিত হওয়া ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরকে ফের রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। 

ভারতের দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস শনিবারের অনলাইন প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়ে লিখেছে, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর এই প্রথমবার কেন্দ্রীয় সরকার এবং উপত্যকার রাজনীতিবিদদের মধ্যকার বরফ গলার ইঙ্গিত মিলল।

কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী ২৪ জুন মোদি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে ডাক পেয়েছেন উপত্যকার নেতারা। সূত্রের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস আরও জানিয়েছে, মোদির ডাকা বৈঠকে অংশ নিতে পারেন উপত্যকার রাজনীতিবিদরা।

সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের সর্বদলীয় বৈঠকে এখনও পর্যন্ত ৯টি দল আমন্ত্রণ পেয়েছে। মোট ১৬টি দলের নেতারা ডাক পেতে পারেন।

জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কাশ্মীরের আঞ্চলিক দল পিপলস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (পিডিপি) প্রধান মেহবুবা মুফতি শনিবার এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘বৈঠকের জন্য আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পেয়েছি এবং আমরা বিষয়টি বিবেচনা করছি।’

এছাড়া কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহ তার ছেলে আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর দল ন্যাশনাল কনফারেন্সও আমন্ত্রণ পেয়েছে। তারাও প্রধানমন্ত্রীর মোদির ডাকা ওই বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে দলটির পক্ষ থেকে জানা গেছে।

কাশ্মীরের বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা গোলাম নবী আজাদ ছাড়াও জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক চার উপমুখ্যমন্ত্রী তারা চাঁদ, মুজাফ্ফর হুসেন বেগ, নির্মল সিং ও কবীন্দ্র গুপ্তকেও মোদির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
 
গত ফেব্রুয়ারিতে লোকসভায় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বলেছিলেন, ‘যখন কাশ্মীর বিভক্ত করা হয়েছিল, তখন কোথাও লেখা ছিল না যে ভূস্বর্গ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাবে না। সঠিক সময়ে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে জম্মু ও কাশ্মীরকে।’ 

ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ‘জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন (সংশোধন) বিল’ পেশের সময় অমিত শাহর এমন মন্তব্যের পরেই জল্পনা দানা বাঁধে যে, অবরুদ্ধ উপত্যকায় শান্তি ফেরাতে কৌশল বদলাতে পারে কেন্দ্র। মোদির ডাকা বৈঠকে তা জোরালো হয়েছে। 

২০১৯ সালে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে জন্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন আইনে লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীর নামে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়া হয়। 

তবে দিল্লি ও পুদুচেরির মতো কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরেও বিধানসভা রাখার কথা বলা হয়েছে ওই আইনে। আগামী নভেম্বরে সেখানে বিধানসভা ভোট হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে কলকাতার বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা।

এএস