করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ফাইজার ও মডার্নার টিকা পুরুষের প্রজননের ক্ষেত্রে কোনো ক্ষতি করে না। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এমআরএনএ প্রতিরোধক দু’টি ডোজ নেওয়ার পর গ্রহীতাদের মধ্যে শুক্রাণুর মাত্রা স্বাস্থ্যকর পর্যায়েই রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) জ্যামা জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণার ফলাফলে ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার এমআরএনএ কোভিড -১৯ টিকার জন্য ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৪৫ জন পুরুষ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের টিকা দেওয়ার আগে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তাদের শুক্রাণুতে উর্বরতার ঘাটতি বা বন্ধ্যাত্বের সমস্যা নেই বলে দেখা যায়।

এছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার উপসর্গ রয়েছে বা ৯০ দিনের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এমন পুরুষদের এই গবেষণা থেকে বাদ দেওয়া হয়। পুরুষদের প্রথমে করোনা টিকার ডোজ গ্রহণের আগে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার প্রায় ৭০ দিন পরে বীর্যের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশনা অনুসারে প্রশিক্ষিত অ্যান্ড্রোলজিস্টদের মাধ্যমে গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৪৫ জনের শুক্রাণু বিশ্লেষণ করা হয়। এতে বীর্যের পরিমাণ, শুক্রাণুর ঘনত্ব, শুক্রাণু গতিশীলতা এবং টোটাল মোটিল স্পার্ম কাউন্ট (টিএমএসসি) অন্তর্ভুক্ত ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘করোনা টিকা নেওয়া বা না নেওয়া নিয়ে মানুষের দ্বিধায় থাকার অন্যতম কারণ হলো- এসব টিকা পুরুষের প্রজনন ক্ষমতার ওপর সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে অনেকে ধারণা করেন। যেহেতু ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলোতে প্রজনন বিষয় নিয়ে মূল্যায়ন করা হয়নি এবং সার্স-কোভ-২ শুক্রাণুর মাত্রা হ্রাসের সঙ্গে যুক্ত, তাই আমরা এমআরএনএ ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে এবং পরে শুক্রাণুর মাত্রা মূল্যায়ন করেছি।’

এছাড়া কোভিড-১৯ এমআরএনএ ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজের আগে এবং পরে শুক্রাণুর প্যারামিটারগুলোরও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণুর প্যারামিটারে কোনো উল্লেখযোগ্য হ্রাস হয়নি।

গবেষণার শুরুতে শুক্রাণুর ঘনত্ব এবং মোট গতিশীল শুক্রাণুর সংখ্যা যথাক্রমে প্রতি মিলিলিটারে ২৬ মিলিয়ন এবং ৩৬ মিলিয়ন ছিল। ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে শুক্রাণুর ঘনত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। প্রতি মিলিলিটারে হয়েছে ৩০ মিলিয়ন থেকে ৪৪ মিলিয়ন।

টিএম