সমকামীদের সন্তান নেওয়ার বৈধতা দিয়ে ফ্রান্সে আইন পাস
সমকামী নারী এবং একক নারীও এখন থেকে সন্তান ধারণ করতে পারবে। এ বিষয়ে নতুন আইন পাস করেছে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট। আইন অনুযায়ী, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আইভিএফ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সন্তান ধারণ করতে পারবেন সমকামী ও একক নারীরা। দীর্ঘ দুই বছর ধরে এই আইনটি নিয়ে আলোচনা হওয়ার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ জুন) ফ্রান্সের পার্লামেন্ট আইনটিকে বৈধতা দেয়।
জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, সমকামী নারী এবং একক নারীদের সন্তান ধারণের বৈধতা দিতে দেশটির ক্ষমতাসীন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার দীর্ঘদিন ধরেই একটি আইন চালু করতে চাচ্ছিল। কিন্তু এ ধরনের কোনো আইনের তীব্র বিরোধিতা করছিলেন ম্যাক্রোঁর বিরোধীরা।
বিজ্ঞাপন
এরপর প্রায় দুই বছর ধরে এই আইনটি নিয়ে ফরাসি পার্লামেন্টে বিতর্ক হয়। সব মিলিয়ে আইনটির পক্ষে-বিপক্ষে প্রায় ৫০০ ঘণ্টার বিতর্ক হয়। ১২ হাজার বার আইনটির পরিবর্ধন এবং পরিবর্তন হয়েছে। শেষপর্যন্ত বিপুল ভোটে ফরাসি নিম্নকক্ষে আইনটি পাস হয়।
আইনের পক্ষে ভোট পড়েছে ৩২৬টি। বিপক্ষে ১১৫টি। দীর্ঘদিন রক্ষণশীল অধ্যুষিত সিনেটে আইনটি আটকে ছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত মাক্রোঁ এবং তার মন্ত্রিসভার চেষ্টায় আইনটি পাস হয়।
বিজ্ঞাপন
কী আছে নতুন আইনে
ফ্রান্সে আইভিএফ চিকিৎসা এতদিন আইনসিদ্ধ ছিল। অর্থাৎ, স্বাভাবিক ভাবে সন্তান না হলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সন্তান নেওয়ার ব্যবস্থা। এছাড়াও স্পার্ম ডোনারও (শুক্রাণুদাতা) আইনসিদ্ধ ছিল। কিন্তু একক নারী কিংবা সমকামীদের ক্ষেত্রে আইভিএফ চিকিৎসা আইনসিদ্ধ ছিল না।
যদিও ফ্রান্সে সমকামী বিয়ে বৈধ। আর তাই বিদেশে গিয়ে বহু নারী আইভিএফ চিকিৎসা করিয়ে সন্তান নিয়ে ফিরতেন। এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ফরাসি পার্লামেন্টে বিতর্ক চলছিল। শেষপর্যন্ত একটি আইন তৈরির কথা হয়। কিন্তু রক্ষণশীলরা কোনোভাবেই এই আইনের পক্ষে ছিলেন না।
আইভিএফ ট্রিটমেন্ট ছাড়াও এই আইনে বলা হয়েছে, স্পার্ম ডোনারের মাধ্যমে কারও সন্তান হলে সেই সন্তান ১৮ বছর বয়সে গিয়ে জানতে চাইতে পারে তার বায়োলজিক্যাল বাবা কে? প্রশ্ন এলে ঠিক উত্তর দিতে হবে। সন্তান চাইলে বাবার সঙ্গে দেখাও করতে পারে।
তবে সারোগেসি নিয়ে এই আইনে কোনো কথা বলা হয়নি। অন্য নারীর গর্ভে সন্তান রাখার পদ্ধতির নাম সারোগেসি। এ বিষয়ে নতুন আইনে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। ট্রান্সজেন্ডারদের স্পার্ম ডোনেট করা নিয়েও নতুন আইনে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
এলজিবিটি প্রতিক্রিয়া
দীর্ঘদিন ধরেই বিষয়টি নিয়ে আন্দোলন করছিলেন ফ্রান্সের এলজিবিটিকিউ কমিউনিটি। আইন পাস হওয়ার পরে তারা জানিয়েছেন, তারা খুশি। তবে এখনও সকল দাবিদাওয়া পূরণ হয়নি।
অন্যদিকে ফ্রান্সের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, দ্রুত আইনটিকে চালু করা হবে যাতে এ বছরের শেষেই সন্তানের মুখ দেখতে পান নারীরা।
টিএম