দুই ব্রিটিশ রানির মূর্তি ভাঙল ক্ষুব্ধ কানাডিয়ানরা
কানাডার আদিবাসী স্কুলগুলোতে একের পর এক গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর দেশটির বিক্ষুব্ধ মানুষজন প্রয়াত ব্রিটিশ রানি ভিক্টোরিয়া ও রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মূর্তি ভাঙচুর করেছে এবং টেনে নামিয়েছে। খবর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির শুক্রবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী কানাডার স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির ম্যানিটোবা প্রদেশের রাজধানী উইনিপেগে ব্রিটেনের সাবেক ও বর্তমান রানির মূর্তিতে ভাঙচুর চালিয়ে উল্লাস করেছে বিক্ষোভকারীরা।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভের সময় ভবন প্রাঙ্গণ থেকে রানি ভিক্টোরিয়ার মূর্তি টেনে ফেলে দেয় তারা। কাছে থাকা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মূর্তিও নামিয়ে ফেলে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে দেশটির পুলিশ স্টান গ্রেনেড ছুড়ে এবং একজনকে গ্রেফতার করেছে।
ঔপনিবেশিক যুগে ১৮৭৬ সালে কানাডার জন্মলগ্নের ১৫৪তম বর্ষপূর্তি উদযাপনের দিন ১ জুলাই ‘কানাডা দিবসে’ ব্রিটেনের দুই রানির মূর্তি ভাঙচুর হল। শিশুদের গণকবর আবিষ্কারের পর অনেকে সরকারকে এই দিবস উদ্যাপন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বিজ্ঞাপন
ব্রিটিশ সরকার দুই রানির দুটি মূর্তি ভেঙে উপড়ে ফেলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসির ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্রিটিশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘রানির মূর্তি অসম্মান করাকে আমরা অবশ্যই নিন্দা জানাই।’
মুখপাত্র আরও বলেন, ‘সম্প্রতি আদিবাসী শিশুদের কবর খুঁজে পাওয়ার হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমরা শোক প্রকাশ করি। আমরা এ রকম ঘটনার খবরকে গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি এবং কানাডা সরকারের সঙ্গে আদিবাসীদের বিষয়ে যোগাযোগ রাখছি।’
সমাজের ‘মূলধারার অংশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য’ উনিশ ও বিংশ শতাব্দীতে কানাডার আদিবাসী সম্প্রদায়গুলোর কমপক্ষে দেড় লাখ শিশুকে জোরপূর্বক নিজেদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে এসব আবাসিক স্কুলে পাঠানো হয়েছিল।
কানাডার সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এসব আবাসিক স্কুলে পড়ার সময় আনুমানিক ছয় হাজার আদিবাসী শিশু শিক্ষার্থী প্রাণহানি হয়। এসব শিশু শিক্ষার্থীকে যেসব স্কুলে রাখা হতো সেসব স্কুলের আবাসন ব্যবস্থা ছিল দুর্বল ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ছিল নাজুক।
আবাসিক স্কুলের বেঁচে যাওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া তার নীতি ও উপনিবেশবাদের বাইরে আমার কাছে কোন অর্থ বহন করেন না। এই মুহূর্তেই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হচ্ছে সেই আমলে তার (ভিক্টোরিয়ার) ঔপনিবেশিক নীতির পরিণতির উপর নির্ভর করে।’
এএস