অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগেসে যোগ দিলেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা প্রয়াত প্রণব মুখার্জির ছেলে সাবেক কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখার্জি।

সোমবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। তার যোগদানের এ সময় সেখানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব ও পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং লোকসভার তৃণমূলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

আনুষ্ঠানিকতা শেষে অভিজিৎ মুখার্জি বলেন, ‌‘ধন্যবাদ জানাতে চাই মমতা দিদিকে এবং অভিষেক বাবুকে। দিদির অনুমতিতে এবং অভিষেকবাবুর অনুমতিতে এখানে আসতে পেরেছি। এক কংগ্রেস ছেড়ে অন্য কংগ্রেসে এসেছি। কংগ্রেসেই আছি।’

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অভিজিৎ বলেন, ‘‌বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমাণ করেছেন যে তিনি বিজেপিকে রুখতে পারেন। আমার বিশ্বাস আগামী লোকসভা নির্বাচনেও তিনি তা করতে পারবেন।’

তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে যখন রাজনীতিতে আসি তখন বাংলায় বামবিরোধী হাওয়া তুলেছিলেন মমতা দিদি। আমি ওনার নেতৃত্বে তখন লড়েছি। তিনি বিজেপিকে রুখতে পেরেছেন। আমি অনুগত সৈনিক হিসেবে যোগ দিলাম।’

অভিজিৎ সোমবার তৃণমূলক কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি এখন থেকে শুধু প্রাক্তন। কোন পদ আমার নেই। বাবা আমাকে কখনো কংগ্রেসে যোগ দিতে বলেননি। আমার নিজস্ব সিদ্ধান্তেই আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম।’

বাবা প্রণব মুখার্জির সঙ্গে অভিজিৎ মুখার্জি।

কংগ্রেসের টিকিটে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে দুইবার সাংসদ হয়েছিলেন অভিজিৎ। তার আগে হয়েছিলেন বীরভূমের নলহাটির বিধায়ক। ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন উপ-নির্বাচনে জঙ্গিপুর থেকে অভিজিৎকে টিকিট দিতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। 

২০১২ সালের কংগ্রেস সরকারে রাষ্ট্রপতি হলে জঙ্গিপুর আসন থেকে পদত্যাগ করেন বাবা প্রণব মুখার্জি। উপ-নির্বাচনে সেই আসন থেকে জিতে লোকসভায় গিয়েছিলেন অভিজিৎ। ২০১৪ সালেও জয় পান তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালের নির্বাচনে হেরে যান।

গত ২১ জুন সন্ধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে যান অভিজিৎ মুখার্জি। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ অভিষেকের সঙ্গে কথা হয় তার। এরপরই আরও জোরালো হয় অভিজিতের দলবদলের জল্পনা। 

তার আগে সাংসদ ও তৃণমূল জেলা সভাপতি আবু তাহের, সাংসদ খলিলুর রহমান, দুই মন্ত্রী আখরুজ্জামান ও সাবিনা ইয়াসমিন, বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের সঙ্গে চা-চক্রে দেখা করেছিলেন অভিজিৎ। তখন থেকেই দলবদলের জল্পনা শুরু হয়েছিল।

এএস