ভারতের কর্নাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি তরুণীকে গণধর্ষণ ও নির্যাতনের দায়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। বৃহস্পতিবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে এক টুইটবার্তায় জানিয়েছেন বেঙ্গালুরু পুলিশের কমিশনার কমল পান্ত।

বেঙ্গালুরু পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেফতার ১২ জনের মধ্যে দুই নারীসহ ১১ জনই বাংলাদেশি।

আসামিদের গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে জানিয়ে বৃহস্পতিবারের টুইটে কমল পান্ত বলেন, ’১২ জন গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১১ জন বাংলাদেশী। গ্রেফতারকৃত আসামিরা বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে আছে। এই মামলার ১ হাজার ১৯ পৃষ্ঠার চার্জশিট ইতোমধ্যে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।’

‘বেঙ্গালুরু পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার এন.বি সাকরির নেতৃত্বাধীন দল মাত্র ৫ সপ্তাহের মধ্যে সব আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। তাদেরকে আন্তরিক অভিনন্দন।’

গত মে মাসের মাঝামাঝি এক তরুণীকে গণধর্ষণ ও বিভৎস নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ভারত ও বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে জানা যায়, ওই তরুণী বাংলাদেশের নাগরিক ও ঢাকার মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। গত তিন মাস ধরে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়, মগবাজারের বাসিন্দা হৃদয় বাবু ওরফে টিকটক বাবু নামে এক যুবক তাকে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ভারতের বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি বাড়িতে আটকে রেখে হৃদয় বাবু ও তার সহযোগীরা ওই তরুণীকে গণধর্ষণ ও নির্যাতন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভিডিও পোস্ট করে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভিডিও ভাইরাল হলে তৎপর হয় বেঙ্গালুরু পুলিশ। ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হতভাগ্য তরুণীকে ‍উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি আসামীদের গ্রেফতারেও শুরু হয় অভিযান।

মে মাসের শেষ দিকে ভারতের কেরালা রাজ্য থেকে হৃদয় বাবুসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকিদের বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে পালাতে গিয়ে তাদের মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। আহতরা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ধর্ষণ, নির্যাতন ও মানবপাচারের অভিযোগে বেঙ্গালুরুর একটি আদলতে মামলা করা হয়েছে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বেঙ্গালুরু পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এখন পর্যন্ত যতদূর জানা গেছে, এই ঘটনার শিকার ও অভিযুক্তদের প্রায় সবাই বাংলাদেশি। দারিদ্র্য ও অসহায়তার সুযোগ নিয়ে দুবৃত্তরা ঘটনার শিকার ওই তরুণীকে অবৈধভাবে ভারতে এনে ধর্ষণ ও নিষ্ঠুর নির্যাতন করেছে।’

গ্রেফতারকৃতরা সবাই সংঘবদ্ধ নারী পাচারকারী দলের সদস্য বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ।

এদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে ১ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল কর্নাটক পুলিশ বিভাগ । বেঙ্গালুরু পুলিশের সহকারী কমিশনার এন.বি সাকরির নেতৃত্বাধীন দল সেই পুরস্কার পাচ্ছেন। টুইটবার্তায় এন. বি সাকরি ও তার দলকে এ বিষয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন বেঙ্গালুরু পুলিশের কমিশনার কমল পান্ত।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএমডব্লিউ