চলতি বছরেই ২০০ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করবে বায়োএনটেক
• প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা ১৩০ কোটি ডোজ থেকে বাড়িয়ে ২০০ কোটি সরবরাহের ঘোষণা
• রোববার পর্যন্ত ৩ কোটি ২৯ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ হয়েছে, বলছে বায়োএনটেক
• গত ৩১ ডিসেম্বর বায়োএনটেকের টিকার অনুমোদন দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
• এই টিকা সংরক্ষণে দরকার মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা
• প্রথম ডোজ নেয়ার ২১ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়
মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট কোম্পানি ফাইজারের জার্মান অংশীদার বায়োএনটেক চলতি বছরে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা ১৩০ কোটি ডোজ থেকে বাড়িয়ে ২০০ কোটি করার ঘোষণা দিয়েছে। ভ্যাকসিন উৎপাদনের স্থাপনা বৃদ্ধি করায় সরবরাহের নতুন এই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ফাইজার এবং বায়োএনটেক।
বিজ্ঞাপন
বায়োএনটেকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা এখন বিশ্বাস করি, ২০২১ সালের মধ্যে আমরা বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবো।
গত সেপ্টেম্বরে নোভার্টিসের কাছে থেকে নেয়া জার্মানির মার্বার্গের নতুন একটি ভ্যাকসিন উৎপাদন কারখানা নিয়েছে বায়োএনটেক। আগামী মাসের শেষের দিকে এই কারখানা ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হলে বছরের ৭৫ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বেশি উৎপাদন করা যাবে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে জার্মান এই কোম্পানি।
বিজ্ঞাপন
বয়োএনটেক বলছে, ঠিকাদাররা ভ্যাকসিনের উপাদান সরবরাহ বৃদ্ধি এবং শিশিজাতকরণে সহায়তা করায় নতুন এই লক্ষ্যমাত্রা সহজেই পূরণ করা সম্ভব হবে। রোববার পর্যন্ত ৩ কোটি ২৯ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ইতোমধ্যে সরবরাহ সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী- ২০২০ সালেই ভ্যাকসিনের ৫ কোটি ডোজ উৎপাদন করা হয়েছে।
বায়োএনটেকের মুখপাত্র
মজুদের অতিরিক্ত সময় এড়াতে নির্ধারিত ক্রয়াদেশ না পাওয়া পর্যন্ত সেগুলোর সরবরাহ স্থগিত রাখা হয়েছে।
মার্কিন ও জার্মান এ দুই প্রতিষ্ঠানের দাবি, তাদের উদ্ভাবিত টিকা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৯৫ শতাংশ কার্যকর। গত ৩১ ডিসেম্বর ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড-১৯ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সেই সময় ডব্লিউএইচও জানায়, ফাইজার ও বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার মানদণ্ড পূরণ করেছে এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ঝুঁকির চেয়ে এই ভ্যাকসিনের সুবিধা বেশি।
ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা সংরক্ষণে জন্য অত্যন্ত শীতল তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। এই টিকা মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। তবে করোনা প্রতিরোধে ফাইজারের টিকার দুটি করে ডোজ নিতে হয়। প্রথম ডোজ নেওয়ার ২১ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়।
করোনার উত্থান এবং বৈশ্বিক মহামারি
• ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়
• চীনে করোনায় প্রথম প্রাণহানি ঘটে ৯ জানুয়ারি
• ১৩ জানুয়ারি চীনের বাইরে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় থাইল্যান্ডে
• এই ভাইরাসে বিশ্বে প্রথম প্রাণহানি ঘটে ২ জানুয়ারি ফিলিপাইনে
• ১১ মার্চ ‘করোনা মহামারি’ ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
করোনার বৈশ্বিক চিত্র
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানের একটি সামুদ্রিক খাবার বিক্রির বাজার থেকে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে। তখন থেকে এই ভাইরাস বিশ্বের ২১৮টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি এবং মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৯ লাখ ৪৪ হাজার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয়, তৃতীয় ঢেউয়ে বিশ্ব যখন ধুঁকছে; তখন অন্তত ৬০টি ভ্যাকসিন পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপে রয়েছে। এরমধ্যে ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড, মার্কিন ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেক, মার্কিন মডার্না, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ ও চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিনও রয়েছে।
এসএস