পাকিস্তানের লাহোরে করোনা টিকা নিচ্ছেন এক ব্যক্তি

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় পাকিস্তানে মডার্নার ৩০ লাখ ডোজ টিকা পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন শেয়ারিং প্রকল্প কোভ্যাক্স’র আওতায় দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিকে শুক্রবার টিকা পাঠায় ওয়াশিংটন।

সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা জানিয়েছে, ভারতে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার ডেল্টা ধরনের কারণে পাকিস্তানে সম্প্রতি ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। এমন সময়েই বাইডেন প্রশাসন পাকিস্তানে ৩০ লাখ ডোজ করোনার টিকা পাঠিয়েছে। রোববার (২৫ জুলাই) এই টিকা দেশটিতে পৌঁছাবে।

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় পাকিস্তানের টিকাদান কর্মসূচি মূলত এতোদিন চীনের তৈরি টিকার ওপর নির্ভরশীল ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলোর নির্মিত করোনা টিকার ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে পাকিস্তানকে সহায়তা করবে।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বিদেশে কাজ করতে যেতে হলে পাকিস্তানের প্রবাসী শ্রমিকদেরকে যুক্তরাষ্ট্র অথবা ইউরোপের কোনো দেশের তৈরি করোনা টিকা নিতে হবে। কারণ বিশ্বের অনেক দেশই এখনও চীনের টিকাকে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো মডার্নার টিকার মাধ্যমে দেশটির প্রবাসী শ্রমিকরা নিঃসন্দেহে উপকৃত হবেন।

হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানিদের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর করোনা টিকা পাঠাতে পেরে বাইডেন প্রশাসন গর্বিত।

ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘কোনো স্বার্থ হাসিল করতে বা বিনিময়ে কিছু অর্জন করতে আমরা এই টিকা পাঠাচ্ছি না। আমাদের পাঠানো টিকার সঙ্গে কোনো শর্ত যুক্ত নেই। টিকা পাঠানোর একটাই উদ্দেশ্য- আর তা হচ্ছে মানুষের জীবন বাঁচানো।’

এদিকে হোয়াইট হাউসের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, ‘এই টিকা পাকিস্তানে চলমান টিকাদান কর্মসূচিকে আরও গতিশীল করবে।’

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় পাকিস্তানে ইতোমধ্যেই ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের কোভিড সহায়তা পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। যদিও প্রায় ২২ কোটি জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তানে করোনা মহামারি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এর আগে গত সপ্তাহে বাংলাদেশে মডার্নার ৩৫ লাখ ডোজ করোনা টিকা পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া ইউক্রেনকে ২০ লাখ ডোজ টিকা পাঠিয়েছে ওয়াশিংটন। করোনা মহামারি মোকাবিলার অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে টিকা দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি প্রেসিডেন্ট বাইডেন দিয়েছেন তারই অংশ হিসাবে এই টিকা পাঠানো হয়।

মডার্নার টিকা ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সীদের দেওয়া যায়। প্রত্যেককে এই টিকার দুই ডোজ করে দিতে হয়। টিকাটির প্রথম ডোজ নেওয়ার চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া যাবে। মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এ টিকা সংরক্ষণ করতে হয়। টিকাটি ব্যবহারের আগে ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৩০ দিন এবং ৮-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে।

মডার্নার এই টিকা গত ২২ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে। এর আগে গতবছরের ১২ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের এফডিএ এবং ৬ জানুয়ারি ইউরোপিয়ান মেডিসিন অথরিটির অনুমোদন পায় টিকাটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মডার্নার টিকা করোনার বিরুদ্ধে ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর।

টিএম