যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে বরাখাস্ত করেছে দেশটির পুলিশ বিভাগ।

এছাড়া ৬ জানুয়ারি   তদন্ত চলছে অন্তত আরো ১০-১৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এর সদস্য এবং ওহিও রাজ্যের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি টিম রায়ান মার্কিন সংবাদ সংস্থা সিএনএনকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

রায়ান বলেন,‘যে দুই কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের একজন ক্যাপিটলে বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চলার সময় এক হামলাকারীর সঙ্গে সেলফি তুলেছিলেন, অপরজন সে সময় মাথায় ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ স্লোগান লেখা টুপি পরেছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে তাদের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে।’

তবে ওই দুই কর্মকর্তার নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

এর আগে সোমবার রাতে ক্যাপিটল পুলিশের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ইয়োগানান্দা পিটম্যান এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশ সদস্যদের যোগসাজশের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে দোষী হিসেবে প্রমাণিত সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

বিবৃতিতে পিটম্যান বলেন,‘হামলার সময়কার ভিডিও ফুটেজ এবং আরো কিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে এসেছে। এগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’

‘যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে স্থায়ী এবং অস্থায়ী বহিষ্কার আদেশসহ অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র পুলিশ বিভাগ।’

গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা যখন নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য অধিবেশনে বসেছিলেন, ঠিক তখনই ট্রাম্পের শত শত সমর্থক কংগ্রেসের ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়েন।

বুধবার দিনের শুরুতে হাজার হাজার ট্রাম্প সমর্থক ‘আমেরিকা বাচাও’ নামক একটি গণজমায়েতে অংশ নিতে ওয়াশিংটনে আসেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই জনসভায় ভাষণ দিয়ে জো বাইডেনের বিজয় অনুমোদন করার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন।

এরপরই সমাবেশের একটু দূরে কয়েকশ' ট্রাম্প সমর্থক ক্যাপিটল ভবনে নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। একপর্যায়ে কংগ্রেসের অধিবেশন চলার মধ্যেই পুলিশের বাধা ভেঙে ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়েন ট্রাম্প সমর্থকরা। এ সময় তাদের অধিকাংশের হাতে ছিল ট্রাম্পের পতাকা।

ট্রাম্পের সমর্থক ও হামলাকরীদের সংঘাতে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরো ১৩ জন।

এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। তাকে অভিশংসনের আওতায় আনার প্রক্রিয়াও ইতোমধ্যে শুরু করেছেন ডেমেক্র্যাট জনপ্রতিনিধিরা। বুধবার এ বিষয়ে কংগ্রেসে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

সূত্র: সিএনএন

এসএমডব্লিউ