চীনে সরকার সমালোচক করপোরেট প্রধানদের সাজার আওতায় আনার ধারাবাহিকতায় নামকরা এক ব্যবসায়ী ও ধনকুবেরকে ১৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত। বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসি জানাচ্ছে, উত্তরাঞ্চলীয় হেবেই প্রদেশভিত্তিক চীনের কৃষিখাতের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম ৬৭ বছর বয়সী সান দাউকে দেশে ‌‘বিবাদ ও সমস্যা সৃষ্টিতে উসকানি’ দেওয়ার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে এই দণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

সরকার সমালোচক ও অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেই সাজা দিয়ে থাকে বেইজিং কর্তৃপক্ষ। সান দাউ অতীতে চীনের সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।    

দেড় যুগ কারাদণ্ডের মুখে পড়া এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে আবাদি জমি দখল, মানুষ জড়ো করে সরকারি সংস্থার ওপর হামলা ছাড়াও সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাকে ৩.১১ মিলিয়ন ইউয়ান জরিমানাও করেছে আদালত।

চীনের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলোর একটি সানের প্রতিষ্ঠানে মাংস প্রক্রিয়াকরণ থেকে শুরু করে পোষা প্রাণীর খাবার এবং স্কুল কিংবা হাসপাতালের খাবারও সরবরাহ করা হয়। গত বছর ২০ ব্যবসায়িক সহযোগী ও স্বজনসহ সাউ দাও গ্রেফতার হয়েছিলেন। 

জমি নিয়ে সরকারি একটি ফার্মের সঙ্গে বিরোধের জেরে গ্রেফতার হওয়ার পর ধনকুবের ওই ব্যবসায়ী সে সময় দাবি করেছিলেন, এই বিরোধের জেরে তার কয়েক ডজন কর্মী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন। 

চীনের অল্প কিছু সরকার সমালোচকের মধ্যে সানকে একজন বলে মনে করা হয়। অতীতে সরকারের গ্রামীণ নীতি নিয়ে বেইজিংয়ের সমালোচনা করেছিলেন তিনি। এছাড়া সরকারের বিরুদ্ধে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন তিনি। 

তবে এবারই প্রথম নয় এর আগে ২০০৩ সালে অবৈধভাবে তহবিল সংগ্রহের অভিযোগে তাকে কারাদণ্ড দিয়েছিল দেশটির আদালত। তবে দেশের জনগণ এবং আন্দোলন কর্মীদের দাবির মুখে তার বিরুদ্ধে ওই মামলা বাতিল করা হয়েছিল।

বিচারের আগে হওয়া শুনানিতে তিনি অবশ্য তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির একজন বিশিষ্ট সদস্য বলে বর্ণনা করেছিলেন। অবশ্য তিনি অনলাইনে বার্তা দেওয়াসহ বেশ কিছু ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। 

এএস