করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তার সামালে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির হাজার হাজার মানুষ। রোববার থাইল্যান্ডের রাস্তায় ব্যক্তিগত গাড়ি এবং মোটরসাইকেলে করে সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ করেছেন তারা।

মহামারি শুরু হওয়ার পর বর্তমানে সর্বোচ্চ প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়ছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটি। রাজধানী ব্যাংককে গাড়ির এবং মোটরসাইকেলের চালকরা উচ্চ হর্ন বাজিয়ে ‌‘দ্য হাঙ্গার গেইমস’ সিনেমায় অনুপ্রাণিত হয়ে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে তিন আঙুল উঁচিয়ে স্যালুট দেন।

ব্যাংককের প্রাণকেন্দ্রের গণতন্ত্র স্মৃতিস্তম্ভ থেকে যাত্রা শুরু করে তারা ২০ কিলোমিটার দূরের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন। সরকারের দমনের আশঙ্কায় ৪৭ বছর বয়সী এক বিক্ষোভকারী পুরো নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমরা সবেমাত্র জীবিকা নির্বাহ শুরু করেছি। কিন্তু আমার পরিবারের সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি বলেছেন, সরকার সঠিক সময়ে টিকা দিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং আমাদের অনেকেই এখন পর্যন্ত টিকার কোনও ডোজই পাননি। আমরা যদি রাস্তায় বেরিয়ে আমাদের দাবি না জানাই, তাহলে সরকার কেবল আমাদের উপেক্ষাই করবে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত থাইল্যান্ডের অন্যান্য প্রদেশেও রোববার একই ধরনের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। চলতি বছর শেষের আগেই ৫ কোটি মানুষকে টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটি।

কিন্তু এখন পর্যন্ত থাইল্যান্ডের মোট ৬ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার মাত্র ৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষকে টিকার সম্পূর্ণ ডোজ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশটির প্রায় ২১ শতাংশ মানুষকে করোভাইরাসের টিকার অন্তত এক ডোজ দেওয়া হয়েছে।

রোববারও থাইল্যান্ডে নতুন করে ১৮ হাজার ২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে মারা গেছেন ১৩৩ জন। এ নিয়ে দেশটিতে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ১৫ হাজার ৩১৪ জন এবং মারা গেছেন ৪ হাজার ৯৯০ জন।

এর আগে, শনিবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসে মৃতদের দেহ রাখার স্থান সংকুলান না হওয়ায় রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতাল হিমায়িত কন্টেইনারে মরদেহ রাখতে শুরু করেছে। করোনায় উপচে পড়া এসব মরদেহ ২০০৪ সালে দেশটিতে আঘাত হানা ধ্বংসাত্মক সুনামির সময় ভয়াবহ স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনছে। মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি কখনই হয়নি এশিয়ার এই দেশটি।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস