৪ খাতের কর্মীদের টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক হংকংয়ে
৪ খাতের কর্মীদের করোনা টিকার ডোজ নেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে হংকংয়ের সরকার। এই খাতগুলো হলো – প্রশাসন, স্বাস্থ্য, বৃদ্ধাশ্রম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। চীনের স্বায়ত্বশাসিত এই অঞ্চলটির সরকারপ্রধান ক্যারি লাম সোমবার এক নির্বাহী আদেশে এ তথ্য জানিয়েছেন।
হংকংয়ের সরকার প্রধানের আদেশ অনুযায়ী, এই ৪ খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ যদি স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো যৌক্তিক কারণ ব্যতীত করোনা টিকার ডোজ গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন, সেক্ষেত্রে ওই কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে সপ্তাহে অন্তত দু’বার করোনা টেস্ট করাতে হবে এবং সেই টেস্টের খরচ বহন করতে হবে নিজের।
বিজ্ঞাপন
এ সম্পর্কে সোমবারের ঘোষণায় ক্যারি ল্যাম বলেন, ‘যদি স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া লোকজন করোনা টিকার ডোজ গ্রহণ থেকে বিরত থাকে, সেক্ষেত্রে কোনো দয়িত্বশীল সরকারের তা সহ্য করা উচিত বলে আমি মনে করি না।’
বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রস্থল হংকং বর্তমানে পৃথিবীর অল্প কয়েকটি স্থানের একটি, যেখানে জনগণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান করোনা টিকার মজুত আছে। তবে হংকংয়ের জনগণের মধ্যে টিকার ডোজ নেওয়ার আগ্রহ লক্ষ্যনীয়ভাবে কম।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, হংকংয়ের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৪৮ শতাংশ করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন এবং টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন ৩৬ শতাংশ মানুষ।
তবে তারপরও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ও এলাকার তুলনায় করোনা সংক্রমণ যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে হংকংয়ে। মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দক্ষিণ চীন সাগরের এই দ্বিপপুঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার জন এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০০ জন।
গত ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে নতুন কোনো সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি হংকংয়ে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পেছনে প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করেছে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ। মহামারি শুরুর পর থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় খাতসমূহ ছাড়া অন্যান্য খাতের কার্যক্রম দীর্ঘদিন বন্ধ রেখেছিল সরকার।
পাশাপাশি হংকংয়ের বাসিন্দা নন- এমন ব্যক্তিদের হংকংয়ে দীর্ঘসময় অবস্থান বা থাকা নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বাইরের দেশের যেসব নাগরিক হংকংয়ে প্রবেশ করেছেন – তাদেরও সরকার নির্ধারিত হোটেলসমূহে দীর্ঘদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার নিয়ম জারি করা হয়েছে।
হংকংয়ের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিকাদান কর্মসূচি ধীর হয়ে পড়েছে প্রধানত দু’টি কারণে- প্রথমত, সাধরণ জনগণের টিকার ডোজ গ্রহণের বিষয়ে অনীহা এবং দ্বিতীয়ত, দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা।
চলতি বছরের শুরু থেকে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ও হংকংয়ের গণতান্ত্রপন্থিদের মধ্যকার দ্বন্দ্ব তীব্র আকার নিয়েছে। চীনের পার্লামেন্টে পাস হওয়া বিতর্কিত নিরাপত্তা আইনের আওতায় কয়েক হাজার গণতন্ত্রপন্থি মানুষ হংকংয়ের কারাগারে বন্দি আছেন।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ