উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে কয়েকদিন আগে দেশটির সরকারি এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায়। অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ এই নেতার মাথার পেছনের দিকে ডাক টিকিটের আকারের কয়েকটি ব্যান্ডেজ চোখে পড়ে অনেকের; যা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে নতুন করে গুঞ্জন তৈরি করেছে। অত্যন্ত গোপনীয়তা অবলম্বন করায় উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়।

আমেরিকা থেকে পরিচালিত উত্তর কোরিয়াভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এনকে নিউজ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার শীর্ষ স্থানীয় দৈনিক চোসুন ইলবো বলছে, গত ২৪ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত কোরিয়ান পিপলস আর্মির অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কিম জং উনের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা যায়। আর এই ব্যান্ডেজ ধরা পড়ে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত ছবিতে।

জুলাইয়ের শেষের দিকে আরেক অনুষ্ঠানে কিমকে দেখা যায়। সেসময় তার মাথার পেছনের দিকের ওই ব্যান্ডেজ আর দেখা না গেলেও একটি গাঢ় সবুজ দাগ দৃশ্যমান ছিল। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত কিম জং উনের ছবি পর্যালোচনার পর এসব তথ্য দিয়েছে ওই দুই সংবাদমাধ্যম।

উত্তর কোরিয়াকে ঘিরে যেসব রহস্য রয়েছে; তার মধ্যে দেশটির নেতার স্বাস্থ্য সম্পর্কে অত্যন্ত গোপনীয়তার বিষয়টি অন্যতম। তবে বর্তমানে ৩৭ বছর বয়সী কোরীয় এই নেতার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিরল আভাষ পাওয়া যাচ্ছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে। উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছে। বিশ্ব থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতির চাকা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন কিম।

দশকের পর দশক ধরে রাষ্ট্রীয় প্রচারণা দেশটির সর্বোচ্চ নেতাদেরকে মানুষের কাছে এমনভাবে চিত্রায়িত করেছে যে, সর্বোচ্চ নেতার জন্য নাগরিকরা নিজেদের কল্যাণকেও ঝুঁকি ফেলতে দ্বিধা করেন না।

গত জুনে দেশটির একজন নাগরিকের বরাত দিয়ে সরকারি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কিমকে নাটকীয়ভাবে শুকিয়ে যাওয়া অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন উত্তর কোরীয়রা। মে মাসের বেশিরভাগ সময় আড়ালে থাকার পর জনসম্মুখে আসেন জুলাইয়ের শেষের দিকে। ওই সময় তাকে অনেক পাতলা দেখা যায়।

কিম জং উন সাধারণত তার মাথার নিচের দিকের চুল ফেলে দেন। যে কারণে তার মাথার পেছনের দিকের অংশে ব্যান্ডেজের চিহ্ন লুকানো কঠিন। মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ বলেছে, কিম জং উনের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে অস্বাভাবিক কোনও আলামত দেখতে পাওয়া যায়নি বলে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ধারণা করছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতাদের বরাত দিয়ে ইয়োনহাপ বলেছে, কয়েকদিন পরই কিমের মাথার পেছনের দিকের প্রলেপ সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং এতে কোনও দাগ ছিল না।

সূত্র: ব্লুমবার্গ।

এসএস