প্রাদেশিক রাজধানী লস্করগাহের অধিকাংশ এলাকাই তালেবানের দখলে
তীব্র যুদ্ধের কারণে হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহ ছেড়ে পালাচ্ছে সাধারণ মানুষ। (পুরোনো ছবি)
আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহ শহরের অধিকাংশ এলাকাই তালেবান দখল করে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। লস্করগাহ ও তার আশপাশে তালেবান এবং সরকারি সেনাদের মধ্যে লড়াইয়ে মঙ্গলবার কমপক্ষে ৪০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। হেলমান্দ প্রদেশে এখনও তীব্র লড়াই চলছে।
তালেবান ইতোমধ্যেই লস্কর গাহ শহরের কেন্দ্রস্থলে ঢুকে পড়েছে এবং শহরের সরকারি প্রচারমাধ্যমের অফিস দখল করে তাদের অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু করেছে। তবে হেলমান্দে আফগান বাহিনীর অধিনায়ক জেনারেল সামি সাদাত বিবিসিকে বলেছেন, তালেবান কিছু জায়গা দখল করেছে ঠিকই, কিন্তু তারা সেখানে টিকতে পারবে না। তিনি যত দ্রুত সম্ভব লস্করগাহের বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে যাবার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘ বলছে, একদিকে তালেবানের স্থল অভিযান, আর অন্য|দিকে সরকারি বাহিনীর বিমান হামলা- এ দুইয়ের মাঝে পড়ে বিপন্ন হয়ে পড়েছে বেসামরিক মানুষ। লড়াইয়ের কারণে লস্করগাহ এবং পাশের প্রদেশের রাজধানী কান্দাহার থেকে হাজার হাজার লোক ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন। এছাড়া লস্করগাহের হাসপাতালগুলো আহত লোকজনের ভিড়ে উপচে পড়ছে বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, তিনি তালেবানের ‘নৃশংসতার কিছু খবর পেয়েছেন’ যা গভীরভাবে বিচলিত হবার মত। এদিকে সামাজিক মাধ্যমে স্পিন বোলদাক শহরের কিছু প্রতিশোধমূলক হত্যার ভিডিও বেরিয়েছে। তবে তালেবান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিজ্ঞাপন
হেলমান্দের ওপর তালেবানের এই হামলা আফগানিস্তানে তাদের সবচেয়ে বড় অভিযান। তালেবান যদি লস্কর গাহ দখল করতে পারে তাহলে সেটি হবে ২০১৬ পর প্রথম প্রাদেশিক রাজধানীর পতন এবং সরকারি বাহিনীর জন্য এক বড় আঘাত। কারণ আমেরিকান এবং ব্রিটিশ বাহিনী আফগান সরকারি বাহিনীর সেনাদের এখানেই প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
তালেবান একযোগে তিনটি প্রাদেশিক শহর দখল করার জন্য আক্রমণ চালাচ্ছে। লস্করগাহ ছাড়া অন্য দুটি শহর হচ্ছে কান্দাহার ও হেরাত। কান্দাহারের বিমান বন্দরে রোববার তালেবান রকেট হামলা চালায়। গত তিনদিনে এখানে ৫ জন নিহত এবং ৪২ জন আহত হয়েছে বলে জাতিসংঘ মিশন জানিয়েছে। কান্দাহার দখল করতে পারলে তালেবান দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে শক্ত ভিত্তি পেয়ে যাবে। এ ছাড়া পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহরেও যুদ্ধ চলছে।
হেলমান্দে সরকারি বাহিনীর প্রধান জেনারেল সামি সাদাত বিবিসিকে জানিয়েছেন, এই লড়াইয়ে অন্যান্য ইসলামী জঙ্গী গোষ্ঠীর সদস্যরা তালেবানের সাথে যোগ দিচ্ছে।
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘তালেবান জয়লাভ করলে তা শুধু লস্কর গাহকেই হুমকিতে ফেলবে না। এর ফলে চোরাগোপ্তা হামলার ঘটনা বেড়ে যাবে। ইউরোপ বা আমেরিকাতে যেসব ছোট কট্টরপন্থী সংগঠন গোপনে কাজ করছে, তারা নতুন নতুন সদস্য জোগাড়ে উৎসাহিত হবে।’
টিএম