করোনার টিকা উৎপাদনে ১৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন
দেশের অভ্যন্তরে করোনা টিকা উৎপাদনে ১৯০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে দক্ষিণ কোরিয়া। বৃহস্পতিবার দেশটির পাবলিক-প্রাইভেট কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন।
এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে টিকার ডোজের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। একদিকে চাহিদার তুলনায় কোম্পানিগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ টিকা উৎপাদন করতে পারছে না। অন্যদিকে, টিকার বণ্টন সুষম না হওয়ায় অনেক দেশ টিকা কেনার মতো অর্থ মজুত থাকার পরও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডোজ কিনতে পারছে না।
বিজ্ঞাপন
‘টিকার ডোজের উৎপাদন বৃদ্ধি ও সুষম বণ্টনের জন্য এক্ষেত্রে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার’- বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে উপস্থিতদের উদ্দেশে মুন জায়ে ইন বলেন, ‘আমরা আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বের শীর্ষ ৫ টিকা উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় ঢুকতে চাই। বর্তমান মহামারি পরিস্থিতিতে আমাদের এই লক্ষ্য নিয়ে এগোনো উচিত।’
বিজ্ঞাপন
বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, দেশের অভ্যন্তরে করোনা টিকার ডোজ উৎপাদনে তিনটি নীতি শিগগিরই নেবে সরকার – (১) সরকারি বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা, (২) উদ্যোক্তাদের কর বিরতি দেওয়া এবং (৩) টিকা উৎপাদনের উপকরণ ও কাঁচামাল সহজলভ্য করতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা।
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কিওন ডেওক চেওল রয়টার্সকে জানান, টিকার ডোজ উৎপাদনের জন্য যে তহবিল গঠন করেছে সরকার, তা থেকে দেশীয় করোনা টিকার জন্যও অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
এ সম্পর্কে কিওন ডেওক চেওল বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী সরকারি কোম্পানি এসকে বায়োসায়েন্স একটি এমআরএনএ কোরোনা টিকা প্রস্তুত করেছে, যা বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ের মেডিকেল ট্রায়ালের মধ্যে রয়েছে।
‘আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের শুরুর দিকে জনগণকে আমরা এই টিকার ডোজ দিতে পারব। তাছাড়া গত জুনে কয়েকটি বেসরকারি দেশীয় কোম্পানি একটি এমআরএনএ টিকা প্রস্তুতের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। আগামী বছরের শেষের দিকে এটি বাজারে আসার কথা।’
দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সূত্র জানিয়েছে, টিকার ডোজ উৎপাদন বিষয়ক প্রকল্পের কাজে ইতোমধ্যে জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ১৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৫০ জন। সরকারি তথ্য ও আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ লাখ ৩ হাজার ৯২৬ জন এবং মারা গেছেন মোট ২ হাজার ১০৬ জন।
গণটিকাদানে এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম অগ্রসর দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন।
সূত্র : রয়টার্স
এমএমডব্লিউ