মহামারি করোনায় বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় করোনার টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় টিকা না নেওয়া মানুষের মৃত্যু তিন গুণ বেশি বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন এক পরিসংখ্যানে তারা এ তথ্য জানায়। 

গত মে থেকে জুলাইয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত হাসপাতালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং জাকার্তার প্রায় ৬৮ হাজার রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যারা করোনা টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন তাদের মৃত্যুহার ৪ দশমিক ১ শতাংশ। বিপরীতে টিকা না নেওয়াদের মৃত্যুহার ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

বিগত কয়েক মাস ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে বিপর্যস্ত। গতকাল বুধবার দেশটিতে মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়ে যায়।

বিশ্বে টিকা নেওয়া এবং না নেওয়াদের মৃত্যুহার নিয়ে কোনো পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও টিকা উদ্ভাবনের সঙ্গে জড়িত মলিকিউলার বায়োলোজিস্ট ডা. ইনেস আতমোসুকারতো বলছেন, টিকার গুরুত্বটা বোঝার জন্য এ নিয়ে পরিসংখ্যান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।   

তিনি বলেন, ‘এতে (জাকার্তা নিয়ে পাওয়া তথ্য) বোঝা যাচ্ছে দুই ডোজ টিকা নিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির হার কমে। তবে জাকার্তার তথ্যে বয়স, লিঙ্গ আর কতদিন পর্যবেক্ষণে রেখে জরিপ চালানো হয়েছে সেসবের ঘাটতি আছে।’    

ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের এক শহরের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত মার্চ থেকে জুলাইয়ে যতজন মানুষের কোভিডে মৃত্যু হয়েছে; তার মধ্যে ৯৩ শতাংশ টিকা নেননি। আর বাকি ৬ শতাংশ এক ডোজ নিয়েছিলেন। একই সময়ে প্রাণ হারানো মানুষদের ১ শতাংশ দুই ডোজ টিকা নিয়েছিলেন।

ইন্দোনেশিয়ার এসব এলাকায় মূলত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও চীনের সিনোভ্যাকের টিকা দেওয়া হয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা সিতি নাদিয়া তারমিজি বলছেন, ইন্দোনেশিয়ায় টিকা নিয়ে অনীহার বিষয়টি মোকাবিলায় এমন তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত দেশটির ১৮ শতাংশ মানুষ টিকার অন্তত এক ডোজ নিয়েছেন। এছাড়া ৮ শতাংশ মানুষ নিয়েছেন পূর্ণ অর্থাৎ দুই ডোজ।

করোনার অতিসংক্রামক ডেল্টা ধরনের প্রকোপে ইন্দোনেশিয়ার অবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এএস/জেএস